জাতীয় সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্কুলের ল্যাবে বিকট শব্দ, আগুন আতঙ্কে হুড়োহুড়িতে আহত ৫০

প্রবাহ রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ঐতিহ্যবাহী নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাইন্স ল্যাবরেটরিতে শিক্ষার্থীরা প্রজেক্টের কাজ করার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির পর ওই স্কুল ভবনেও আগুন আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী আহত হয়। এর মধ্যে ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম ভবনের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে শিক্ষার্থীরা একটি প্রজেক্টের কাজ করছিল স্কুল ভবনের তৃতীয় তলায়। এসময় মাল্টিপ্লাগের মাধ্যমে বিদ্যুতের সংযোগ দিতে গিয়ে হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয়। শব্দ শুনে স্কুলের চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। একজনের দেখা দেখি অন্যরা সিঁড়ি দিয়ে দৌঁড়ে নামার চেষ্টা করে। হুড়োহুড়ি করে নামতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর মধ্যে ১১ জনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা হলো, আমেনা জাহানা আরিশা (৮ম), সোহামণি ইতি (৬ষ্ঠ), তাসনোভা ইসরাত (৭ম), মাকিয়া আক্তার লামিয়া (৮ম), ফারিয়া সুলতানা (৮ম), তানজিনা আক্তার (৭ম), নোহা ইসলাম (৮ম), কলি (৮ম), আরিফা (৮ম), রুহান (৭ম), ফাতেমা আক্তার মীম (৭ম)। তাদের মধ্যে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুহানকে নিবিড় পরিচর্যা (আইসিইউ) কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থী সোহামণি ইতি ও ফাতেমা আক্তার মীম জানায়, আগুন লেগেছে শুনে দৌঁড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়েছি। আমরা এসময় ব্যাথা পেয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক কেশব দেবনাথা জানান, শব্দ শুনে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কিছু হয়নি বলার পরও শিক্ষার্থীরা আমাকে ধাক্কা মেরেই রুম থেকে বের হয়ে যায়। পরে নামতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছে। যারা ব্যাথা পেয়েছে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ইংরেজির শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তার বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রস্তুতির সময় মাল্টিপ্লাগের শর্ট সার্কিটের শব্দ শুনেই তারা আতঙ্কে রুম থেকে আগুন আগুন বলে চিৎকার করে দৌঁড়াতে থাকে শিক্ষার্থীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইমুল হুদা জানান, বাচ্চারা আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে । এরমধ্যে ভয়ে একটি ছেলের শ^াসকষ্ট দেখা দিয়েছে। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আশা করছি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাকিরা বাসায় চলে যেতে পারবে। এদিকে এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের ও হাসপাতালে ভিড় জমায় সাধারণ মানুষ। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা (শিক্ষা ও আইসিটি) তাহমিনা আক্তার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঞা, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও জেলা বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান মোল্লা কচিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা হাসপাতালে ছুটে যান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button