জাতীয় সংবাদ

ভোটের আগে লটারিতে এসপি- ওসিদের বদলি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

থাকবে ৪৭ হাজার বডি ক্যামেরা

প্রবাহ রিপোর্ট : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সকল জেলার এসপি ও ওসিদের লটারির মাধ্যমে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল বুধবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় বলার পর আজকের বৈঠকে নির্বাচনের সময় যে লজিস্টিক সাপোর্ট প্রয়োজন হবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়ার কথা বলেছেন। সরকারের তরফে সকল প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এবারের নির্বাচন যেন আনন্দ-উৎসবের দিক থেকে, শান্তি-শৃঙ্খলার দিক থেকে, ভোটার উপস্থিতির দিক থেকে, সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতার দিক থেকে দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে সেজন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করতে আগামীকাল থেকে আমরা সকলেই মানসিক প্রস্তুতি ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন শুরু করব।” প্রধান উপদেষ্টার এ ঘোষণার পর গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এ বৈঠক হল। বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যেকোনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। “নির্বাচনের সময় দেখা যায় প্রার্থীরা তাদের আসনে পছন্দের ডিসি, এসপি কিংবা ওসিকে পদায়ন করতে চান। কিন্তু আমরা এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সামনে লটারি করবো।” লটারি অনুযায়ী নির্বাচনের আগে বিশেষভাবে এসপি ও ওসিদের পদায়ন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, স্যারের (প্রধান উপদেষ্টা) নির্দেশনা থেকে, এখন কর্মকর্তারা যেখানেই থাকুন না কেন নির্বাচনের আগে বিশেষ করে পুলিশ বিভাগে লটারির মাধ্যমে বদলি করা হবে। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ও অমুকের সমর্থক, সে তমুকের সমর্থক’-কারো মধ্যে যেন এরকম কোনো সন্দেহ না থাকে। তিন বলেন, “এসপিদের বিষয়ে (লটারি) এখানে (সচিবালয়ে) করা হবে, আর ওসিদের বিষয়ে একটা পদ্ধতির মধ্যে বিভাগীয়ভাবে করা হবে।” নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কিছুদিন আগে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। “এরপরেও নির্বাচন কমিশন যদি করতে চায়, তফসিল ঘোষণা পর তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে,”বলেন তিনি।
৪৭ হাজার কেন্দ্রে দেওয়া হবে বডি ক্যামেরা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আজকে আমরা আলোচনা করেছি সারাদেশের নির্বাচন পরিচালনার জন্য কতো ফোর্স প্রয়োজন হবে এসব বিষয়ে। এছাড়া আমার সিদ্ধান্ত নিয়েছি সবাইকে বডি ক্যামেরা দেওয়ার চেষ্টা করব। ওইটা কার কাছে কীভাবে থাকবে সে বিষয়ে আলোচনা করছি। প্রিজাইডিং অফিসাররা যেন কারো বাসায় না থেকে নির্বাচনী কেন্দ্রে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে। তাদের সাথে আনসার ও পুলিশ সবাই থাকবে। কারা বডি ক্যামেরা পাবে এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ৪৭ হাজার ভোট কেন্দ্রের প্রতি কেন্দ্রেই একটি করে বডি ক্যামেরা দেওয়ার চেষ্টা করব। পুলিশের সিনিয়র পোস্টে যিনি থাকবেন, তার কাছে থাকবে। সবগুলো বাহিনীকে আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এছাড়া নির্বাচন কমিশনকে বলেছি; তারা যেন পোলিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসারদেরকে প্রশিক্ষণ দেন। আমাদের বাহিনীর প্রশিক্ষণের পর আমরা একটু মহড়াও দিব। নির্বাচনটা যাতে ভালোভাবে হতে পারে সেই অনুশীলনও করব। তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা আট লাখের মতো থাকবে। আনসার থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী পর্যন্ত সবাই থাকবে এর মধ্যে। সব বাহিনীকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৭৬ কর্মকর্তাকে সংযুক্ত বদলি করার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটা রুটিন বিষয়। চলতে থাকবে এটা।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button