জাতীয় সংবাদ

শহীদ-আহতদের পরিবারের জন্য সাড়ে ৫শ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব

দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ ও ঋণ

প্রবাহ রিপোর্ট : ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে একটি উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। শহীদ পরিবার ও আহতদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে প্রায় ৫৫৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে জমা দিয়েছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। জানা গেছে, ‘জুলাই-২০২৪ গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সুদৃঢ়করণে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃজন’ শীর্ষক প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ১২ হাজার ৮৮০ জনকে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য তাদের প্রত্যেককে ঋণও প্রদান করা হবে। পুরো প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০২৮ পর্যন্ত। অনুমোদন পাওয়ার পর দ্রুত প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এই প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়া নিয়ে গত ৩১ জুলাই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রকল্পটির পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা গত ১৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্পের ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) পুনর্গঠনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর নিউ প্রজেক্টস অব ডিওয়াইডি’ প্রকল্পের পরিচালক মো. সেলিমুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ জুন মাসের আগেই শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনের সুযোগ তৈরি করা হবে। প্রকল্প প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, জুলাইয়ের আন্দোলন ছিল সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ, যা দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। আন্দোলনের সময় সরকারি হিসাব অনুযায়ী ৮৩৪ জন শহীদ এবং ১২ হাজার ৪৩ জন আহত হয়েছেন। অনেকের স্থায়ীভাবে অঙ্গহানি হয়েছে, অনেকে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। আহত ও শহীদ পরিবারের অধিকাংশই নি¤œ আয়ের ও শ্রমজীবী হওয়ায় তাদের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সব আহত এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, সব শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যকে প্রকল্পের উপকারভোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এছাড়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের চলমান ট্রেড এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষে ঋণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে তাদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা-১) মো. শাহীনূর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রকল্পটির প্রস্তাব বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে আছে। সেখান থেকে অনুমোদন হলে দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ১২ হাজার ৮৮০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তথ্যপ্রযুক্তি, ড্রাইভিং, হস্তশিল্পসহ অন্যান্য বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের পর প্রকল্পের আওতায় ঋণও দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button