জাতীয় সংবাদ

আরেক দফা ভাঙল জাপা

প্রবাহ রিপোর্ট : জিএম কাদের অংশের আপত্তির মুখে কাউন্সিল করে জাতীয় পার্টির নতুন কমিটি করা হয়েছে। ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান ও এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন।
শনিবার (৯আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে ইমানুয়েল কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিলে সারাদেশ থেকে আগত প্রায় দুই হাজার কাউন্সিলরদের কণ্ঠভোটে তারা নির্বাচিত হন।
কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে জাতীয় পার্টি গঠিত তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম জহির নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব হিসেবে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের নাম ঘোষণা করেন। কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন- মোস্তফা আল মাহমুদ মো. আরিফুর রহমান খান।
জাপার নতুন কমিটিতে কাজী ফিরোজ রশিদকে সিনিয়র কো. চেয়ারম্যান ও মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এসময় সারাদেশ থেকে আগত কাউন্সিলরদের পাশাপাশি প্রায় তিন হাজারের বেশি ডেলিগেট কাউন্সিলে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কাউন্সিলের উদ্বোধন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুজিবুল হক চুন্নু।
প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধনী আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জেপির) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এটিইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রতনা, নাজমা আকতার, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূইয়া, আরিফুর রহমান, নুরুল ইসলাম মিলন, জিয়াউল হক মৃধা, খান ইসরাফিল খোকনসহ দলটির অধিকাংশ সিনিয়র নেতা ও বিভিন্ন জেলা কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকরা।
কাউন্সিলে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর, দিদারুল আলম দিদার, মতিন ও জাফর আহমেদ জয় প্রমুখ।
জাপার নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ আদালতে গড়ানোর পর দলটি ষষ্ঠবারের মতো ভাঙল। দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরোধীরা শনিবার জাপার নামে কাউন্সিল করল। যদিও জি এম কাদের নিযুক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ কাউন্সিলকে অবৈধ আখ্যা দেন।
চার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে অংশ নিয়ে স্বৈরাচারের দোসর তকমা পাওয়া গত তিন সংসদে জাপা গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল। ১৯৮৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত দলটি তার জীবদ্দশায় চারবার ভাঙে। ২০১৯ সালে জি এম কাদের দলের নেতৃত্বে আসার পর এটি আরও একবার ভাঙে।
গত বছরের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর রওশন এরশাদের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা একই নামে দল করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর জি এম কাদের সমর্থন করেন অর্ন্তর্বতী সরকারকে।
কিন্তু অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের প্রবল আপত্তির মুখে সরকারি বৈঠকে জাপাকে ডাকা বন্ধ করা হয়। স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে জাপার কার্যালয়-কর্মসূচিতেও হামলা হয়। এরপর জি এম কাদের সরকারের সমালোচক হিসেবে আবির্ভূত হন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button