এখন কেউ প্রতিহত করে না, ভিডিও করে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রবাহ রিপোর্ট : গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমরা জাতি হিসেবে খুব অসহিষ্ণু হয়ে গেছি। আমাদের এখন কোনো ধৈর্য নেই। তিনি বলেন, আগে সমাজে কোনো খারাপ কাজ ঘটলে লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়তো সেটা প্রতিহত করার জন্য। কিন্তু আজকাল সেটা খুব কমে গেছে। এখন সবাই ভিডিও করে। গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, সবসময় সব জায়গায় তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকেন না। গাজীপুরের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা সমাজে কেউ চিন্তাও করতে পারে না। কিন্তু ঘটনাটা ঘটে গেছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বেশিরভাগ কে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। কিন্তু যে জীবনটা চলে গেল, সেই ক্ষতিপূরণ তো আর হবে না। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমরা যদি একটু ধৈর্যশীল হই তাহলে এগুলো একটু কমে। এ ঘটনায় অপরাধীরা যেন ভালোভাবে শাস্তি পায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এমন ঘটনা কিন্তু জনগণেরও প্রতিহত করার কথা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই যে শেরপুরের ঘটনায় যে ভিডিও করছে, তার নানিকে মেরে ফেলা হচ্ছে, কিন্তু সে দাঁড়িয়ে ভিডিও করছে আয় করার জন্য। আমাদের সমাজের কত বড় অবক্ষয় এটা। ইউটিউবের জন্য সে ভিডিও করেই যাচ্ছে। তার নাতিটা যদি চিল্লাইতো, তাহলেও তো কেউ সাহায্য করতো। অভিযানে উদ্ধার অস্ত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো দেশি অস্ত্র। এই অস্ত্রগুলো যারা বানাচ্ছে, তাদের একটু কেয়ারফুল হতে হবে। যারা বানাচ্ছে, আমরা কিন্তু তাদেরও নিয়ে আসছি। যারা এসব অস্ত্র বানায়, তারা কিন্তু জানে এগুলো করা ব্যবহার করছে। আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি।
হারানো অস্ত্রের খবর দিলে পুরস্কার: গণঅভ্যুত্থানের সময় হারানো অস্ত্র উদ্ধারের ক্ষেত্রে পুরস্কার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যেসব হাতিয়ার হারিয়ে গেছে, সেগুলো উদ্ধারে আমরা একটা সার্কুলার দিচ্ছি এবং পুরস্কার ঘোষণা করছি। তিনি বলেন, আমরা একটি কমিটি করে কত টাকা দিতে পারি, সে অনুযায়ী একটি সার্কুলার দেব। কেউ খবর দিতে পারলে পুরস্কারটা তিনি পাবেন। কত অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সাত শতাধিক অস্ত্র বাইরে রয়ে গেছে, এটা আনুমানিক।
প্রিসাইডিং অফিসারের নিরাপত্তায় একজন অস্ত্রধারী আনসার থাকবে: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের জন্য একজন করে অস্ত্রধারী আনসার থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনের সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে আনসার। আনসারের ভূমিকাটা সবচেয়ে বড়। এবারে প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে একজন অস্ত্রসহ আনসার দিচ্ছি। অনেক সময় দেখা যায় প্রিসাইডিং অফিসার অ্যাটাকের শিকার হন। যেন তাকে কোনো কিছু করতে না পারে এজন্য একজন অস্ত্রধারী আনসার দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য সময় ছয়জন পুলিশ ও চারজন আনসার থাকে। এদের মধ্যে দুজন অস্ত্রধারী। এবার আমরা তিনজন অস্ত্রধারী আনসার দিচ্ছি। এ ছাড়া সেনাবাহিনী, পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আলাদা অস্ত্র থাকবে। নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে সেটা প্রতিষ্ঠা হিসাবে দায় কিন্তু আপনার- সাংবাদিকের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দায় এটা আসবে না। নির্বাচন ভালো হলে লোকজন আমার প্রশংসা করবে। দায় আমারে কেন করবে। আমি এ রকমভাবে একটা নির্বাচন করে যেতে চাচ্ছি যেন লোকজন প্রশংসা করেন। দেখা হলে যেন বলে ভাই কেমন আছেন, যেন আপনারা মুখ ফিরিয়ে না নেন।