জাতীয় সংবাদ

রাজশাহীতে একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার

প্রবাহ রিপোর্ট : রাজশাহীতে একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে পবার বামুনশিকড় এলাকায় একটি বাসা থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- মিনারুল ইসলাম (৩০), তার স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮), ছেলে মাহিম (১৩) ও দেড় বছর বয়সী মেয়ে মিথিলা। পুলিশের ভাষ্য, মনিরুল ও তার ছেলে এক ঘরে, আর অন্য ঘরে তার স্ত্রী ও মেয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। সকালে প্রতিবেশীরা ঘরে এসে লাশ দেখতে পেয়ে খবর দেয়। পুলিশ এসে দেখতে পান মিনারুল ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন। তার ছেলের লাশ বিছানায়। অন্যঘরে মিনারুলের স্ত্রী ও তার মেয়ের লাশ শোয়ানো ছিল। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, মিনারুল স্ত্রীকে ওড়না দিয়ে, মেয়েকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেন। এদিকে পুলিশ মিনারুলের মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে লেখা, আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এই কারণে যে, আমি যদি মরে যাই, তাহলে আমার ছেলে-মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের গায়ে আর খাওয়ার অভাবে। তাই আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভালো। কারো কাছে কিছুই চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে কারো কাছে ছোট হতে হবে না। আমার জন্য আমার বাবা অনেক লোকের কাছে ছোট হয়েছে। আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মিনারুল একসময় জুয়া খেলতেন ও মাদকাসক্ত ছিলেন। এতে অনেক টাকা ঋণ করেন। সম্প্রতি বাবার জমি বিক্রি করে ঋণ কিছুটা শোধ করলেও আর্থিক সংকটে ছিলেন। রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি মিনারুল তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গামছা দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর তিনি নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার পর পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান। তিনি জানান, লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ সব বিষয়ে মাথায় রেখে তদন্ত করছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button