জাতীয় সংবাদ

‘এটা কি আমার বাপের টাকায় করছে’, ফলকে নিজের নাম দেখে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ঢাকা-বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ উদ্বোধন

প্রবাহ রিপোর্ট : ঢাকা-বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ উদ্বোধনের নামফলকে নিজের নাম দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় তিনি কর্মকর্তাদের বলেন, ‘এখানে নাম থাকা যাবে না। নাম আসলো কীভাবে? এটা কি আমার বাপের টাকায় করছে? তাহলে কেন আমার নাম থাকবে? এটা ইমিডিয়েটলি চেঞ্জ করো। আমার নাম কেন থাকবে? যারা করেছে, মন্ত্রণালয়ের বা অন্যান্যদের নাম থাকতে পারে।’ পরে নামফলক উন্মোচন না করেই গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকায় টোল প্লাজার পাশে ফিতা কেটে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ফাওজুল কবির খান। এর মাধ্যমে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ধাপের ১৮ কিলোমিটার অংশ খুলে দেওয়া হলো। উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির উদ্বোধনী ফলকের সামনে গিয়ে লাল পর্দা সরাতেই দেখেন নিজের নাম লেখা। এ দেখে সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেগে গিয়ে প্রশ্ন করেন- এখানে আমার নাম কেন? এরপর তিনি উদ্বোধন না করে নিজের গাড়ির দিকে ফিরে যান। এ সময় তিনি বলেন, ‘এটা ইমেডিয়েট ঠিক করেন। এখানে নাম থাকা যাবে না। এটা কি আমার বাপের টাকায় করছে, তাহলে কেন আমার নাম থাকবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘ফলকে শুধু লেখা থাকবে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন, মন্ত্রণালয়ের নাম। আমার টাকায় তো হয়নি, তাহলে আমার নাম কেন থাকবে?’ এরপর তিনি গাড়িতে উঠতে গিয়েও না উঠে মোনাজাতে অংশ নেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহসানুল হক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন প্রমুখ। উদ্বোধনের আগে মঞ্চে বক্তব্য দেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় তিনি বলেন, ‘আশপাশের দেশের তুলনায় আমাদের রাস্তা নির্মাণের ব্যয় অনেক বেশি, এগুলো কমাতে হবে। আপনারা জানেন যে রাস্তাঘাট দুর্নীতির একটা বড় ক্ষেত্র। এই দুর্নীতি কমালে এবং আমাদের প্রকৌশলীরা যদি দেখেন তাহলে এটাকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ রাস্তা নির্মাণের ব্যয় কমানো সম্ভব। সড়কের ওপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে হবে। অন্যান্য যেসব যাতায়াতের মাধ্যম রয়েছে, তার মধ্যে রেলপথ, নদীপথ ও বিমানের (আকাশপথ) ব্যবহার বাড়াতে হবে।’ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২২ সালের মে মাসে। ভোগড়া বাইপাস থেকে মদনপুর পর্যন্ত বিস্তৃত এই প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পুরো এক্সপ্রেসওয়ে হস্তান্তরের সময়সীমা ২০২৬ সালের জুন। প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বলেন, ঢাকা-বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের ১৮ কিলোমিটার কাজ শেষ, তাই যান চলাচলের জন্য তা খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে নিরাপত্তা ও গতি নিশ্চিত করতে এক্সপ্রেসওয়েতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আংশিকভাবে টোল আদায় শুরু হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button