দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী চায় না ৮৯ শতাংশ মানুষ

সুজনের জরিপ
প্রবাহ রিপোর্ট : একই ব্যক্তির সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন ৮৯ শতাংশ মানুষ। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) এক জনমত জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপের মূল প্রবন্ধে এ কথা জানানো হয়। সুজনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিনের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজনের জাতীয় কমিটির সদস্য মো. একরাম হোসেন। প্রবন্ধে উঠে আসে, জনগণ ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং দীর্ঘমেয়াদি নেতৃত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। জনগণ চায় যে প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ব্যক্তি অতিরিক্ত ক্ষমতা অর্জন না করুক, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সুজনের জনমত জরিপে দেশের ৬৪টি জেলা থেকে মোট এক হাজার ৩৭৩ জন নাগরিক অংশ নিয়েছিলেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নারী ছিলেন ৩৩৫ জন, পুরুষ এক হাজার ৩৩ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের পাঁচজন। জরিপে দেখা গেছে, তরুণ এবং মধ্যবয়সী উভয় শ্রেণির জনগণ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিতকরণের পক্ষে। শহরাঞ্চলের জনগণ এই প্রস্তাবের গুরুত্ব বেশি দেখেছেন, তবে গ্রামীণ এলাকা থেকেও ব্যাপক সমর্থন পাওয়া গেছে। জরিপের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জনগণ দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। তারা মনে করেন, একাধিক মেয়াদে একই নেতা থাকলে নীতি প্রণয়ন ও প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে, যা রাষ্ট্রের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জরিপে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ শুধু ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা নয়, এটি নতুন নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনী নীতি প্রবর্তনের সুযোগও সৃষ্টি করে। এটি জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও সহায়ক। এ ছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী পদে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে ক্ষমতার অপব্যবহার, নীতি প্রণয়নে পক্ষপাত এবং দুর্নীতির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এই কারণেই তারা দৃঢ়ভাবে দুই মেয়াদ সীমিত করার পক্ষে। নাগরিক সংলাপে বলা হয়, সংলাপ ও জনমত জরিপের মাধ্যমে সুজন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে স্পষ্ট বার্তা পাঠাচ্ছে যে, জনগণ একক ক্ষমতার প্রতি সীমাবদ্ধতা আরোপের পক্ষে। এটি দেশীয় রাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে, যা সরকার ও জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য অনুপ্রাণিত করবে।