জাতীয় সংবাদ

মাছ ধরতে গিয়ে ১৯ দিন ধরে নিখোঁজ ১৮ জেলে

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ ককসবাজার শহরের আলী আকবর (৪৯) মালিকানাধীন খাজা আজমীর নামে একটি ট্রলার ১৩ সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রাম নতুন ফিশারী ঘাট এলাকা থেকে সাগরে মাছ ধরতে যায়। মহেশখালীর আব্দুল মান্নান সহ ১৮জন মাঝি মাল্লা সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে হারিয়ে গেছে। তাদের কোন হদিস নেই, পাওয়া যাচ্ছে না মোবাইল ফোনের সংযোগ। জেলের সন্ধান পেতে দিশেহারা হয়ো পড়েছ স্বজনেরা। বঙ্গোপসাগরের অজানা জলরাশিতে হারিয়ে গেছেন মহেশখালীর আবদুল মন্নানসহ ১৮ মাঝিমাল্লা। তাদের খোঁজ নেই টানা ১৯ দিন। প্রতিদিন সকালবেলা ঘরের দরজার সামনে বসে থাকা মায়ের চোখে শুধু একটাই প্রশ্ন-“আমার ছেলে ফিরবে তো?”স্ত্রী বলে স্বামী ফিরবে, না হয় ফোনটা বাজবে। ” কিন্তু দিনের পট দিন যায় ১৯ হলো দেখা মিল্লনা নিখোজ দেজেদের কোন সন্ধান। ট্রলারের মালিক আলী আকবর নিজেও মাঝিমাল্লাদের সাথে ছিলেন ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে মুটোফোনে শেষ কথা হয় নিখোজ আলী আকবরে স্ত্রী সেলিনার। আলাপের পর হঠাৎ করেই তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। শুধু আলী আকবর নন, বোটে থাকা অন্য মাঝিমাল্লাদের ফোনও একযোগে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর কোনো খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ জেলেদের। জেলে হারা পরিবারের স্বজনরা বার কান্নায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। মাতারবাড়ীর তিতা মাঝির পাড়ার আবদুল মন্নানের স্ত্রী ছোট ছোট সন্তানদের বুকে চেপে কাঁদতে কাঁদতে বলেন ওরা বলে, বাবা কবে আসবে? আমি কী জবাব দেবো? চোখ মুছতে মুছতে ভাবি, যদি আজই ফিরে আসে। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ১৩ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন-আলী আকবর (৪৯), আবু তাহের (৬৯), আবদুল মন্নান (৩৮), মোঃ রুবেল (২৭), আমির হোসাইন (২৭), মোহাম্মদ জামাল (৪৯), মোহাম্মদ ইসাক (৩৩), জামাল আহমদ (৩৪), মোহাম্মদ হেলাল (৩৫), শেফায়ত উল্লাহ (৩৯), জয়নাল আবেদীন জইন্যা (৫০), মোহাম্মদ এহছান (৩৮), মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন (৩৮) ও শাহাব উদ্দিন (৪৫)। এছাড়া নোয়াখালী ও বাঁশখালীর আরও কয়েকজন জেলের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন-“ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে চেষ্টা চলছে। দেশের সব থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ”১৯দিন ধরে নিখোঁজ থেকে পরিবারের কাছে কোনো খবর না আসায় তাদের জীবনে নেমে এসেছে গভীর অন্ধকার। নিখোঁজদের স্বজনদের দাবি-সরকার যেন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে তাদের সন্ধান করে দেয়। “যদি তারা জীবিত থাকে তবে ফিরিয়ে আনুন, আর যদি না থাকে তবে অন্তত লাশটা এনে আমাদের বুক ভরে কাঁদতে দিন”-এমন দাবি করছেন স্বজনরা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button