রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন

প্রবাহ রিপোর্ট : রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় জড়িত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য আসামিদের চিহ্নিত করে ৫ মাসেরও কম সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে সিআইডি। প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরু করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন খান গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান। গত ১৪ আগস্ট ওই মামলায় শেখ হাসিনাসহ মোট ২৮৬ জন আসামির বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১২১/১২১ক/১২৪ক ধারায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে সিআইডি। সেই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরু করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এই আদেশ দেন। সিআইডি জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জন এবং অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা রুজু করে সিআইডি। মামলা রুজুর পর সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, সার্ভার ও যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্য সংগ্রহ এবং ফরেনসিক বিশ্লেষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে সিআইডি। পাশাপাশি সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে সিআইডি প্রয়োজনীয় সব সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে। এভাবে ৫ মাসেরও কম সময়ে এ বছরের ১৪ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৮৬ জন আসামির বিরুদ্ধে দ-বিধির ১২১/১২১ক/১২৪ক ধারায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের সূত্র ধরে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর জয় বাংলা ব্রিগেড নামে একটি অনলাইন প্লাটফর্ম জুম প্ল্যাটফর্মে মিটিং করে, যেখানে দেশ ও বিদেশ থেকে অনেকেই অংশগ্রহণ করেন। সিআইডি প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য, ডিজিটাল উপাত্ত ও ভয়েস রেকর্ড বিশ্লেষণে দেখতে পায়, ওই সভায় অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের আহ্বান, গৃহযুদ্ধ সৃষ্টির পরিকল্পনা এবং পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠার ঘোষণাসহ রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে স্বল্পতম সময়ে সিআইডি আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠালে সেখানে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলমসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অনেকেই এই রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে। সারা দেশের বিভিন্ন জেলখানায় অন্যান্য মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য সিআইডি আদালতকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার মাধ্যমে মোট ৯১ জনের গ্রেপ্তার নিশ্চিত করে। গ্রেপ্তারএদর ৯১ জন ছাড়া বাকি ১৯৫ জন আসামি পলাতক রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার আদালতে মামলাটির শুনানির দিন ধার্য ছিল। প্রধান আসামিসহ সিংহভাগ অনুপস্থিত থাকায় আদালত জাতীয় পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারিক আদালতে বিচারকাজ পরিচালনার আদেশ দেন।