জাতীয় সংবাদ

কয়েকজন উপদেষ্টার অপকর্মের প্রমাণ আছে, সংশোধন না হলে নাম প্রকাশ করবো : তাহের

প্রবাহ রিপোর্ট : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, সরকারের ৪-৫ জন উপদেষ্টা একটি দলের হয়ে কাজ করছে। তাদের বিভিন্ন অপকর্মের প্রমাণ রেকর্ড আছে। সংশোধন না হলে জনসমক্ষে নাম প্রকাশ করে দিবো। জনগণ যদি জানে তারা জুলাইয়ের চেতনার সঙ্গে বেইমানি করছেন, তাহলে তাদের অবস্থা পতিত ফ্যাসিবাদের চেয়েও খারাপ হবে। নীলনকশার নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চলছে। ২০১৮ ও ১৪ এর মতো নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নেবে না। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং জাতীয় পার্টিসহ চৌদ্দ দলের বিচারের দাবিতে জামায়াতের মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের এ কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক জামায়াতের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুল ও উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটি এম মাছুম, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ইয়াছিন আরাফাত ও দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ। ডা. তাহের বলেন, আমরা মনে করেছিলাম ফ্যাসিবাদের বিদায়ের পর আমাদের আর রাজপথে নামতে হবে না। কিন্তু একটি দল জুলাইকে দলীয় দৃষ্টিতে বিবেচনা করে এর চেতনাকে ধারণ করতে চায় না। তারা যেনতেনভাবে নির্বাচন চায়। প্রশাসনকে দলীয় করণ করতে চায়। এতে সরকারের কিছু উপদেষ্টাকে ব্যবহার করছে। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি ভালো মানুষ। অনেকে বলে আপনি সরল ও সোজা, প্যাচ বুঝেন না। আমরা বলবো আপনার আশপাশের সবাই ভালো মানুষ নয়। আপনার কাছের কিছু লোক আপনাকে বিভ্রান্ত ও ব্যবহার করছে। তাদের সরান। না হয় জনগণ সরিয়ে দিবে। জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, হাসিনা ১৬ বছর টিকে ছিল। আর এভাবে চললে আপনারা কয়েক মিনিটও টিকতে পারবেন না। বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটি দল মুখে সংস্কারের কথা বললেও ঐকমত্য কমিশনে প্যাচ লাগিয়ে দেয়। সংস্কারের দাবি না মানলে জনগণ রাজপথে নামবে। গণভোটের সিদ্ধান্ত মানায় বিএনপিকে ধন্যবাদ জনান। তবে তিনি অভিযোগ করেন এক্ষেত্রে দলটি কৌশল করছে। তারা বলে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একদিনে করতে হবে। কিন্তু আমরা মনে করি এটা সম্ভব নয়। এক সঙ্গে দুটি ভোট হলে বিভিন্ন সমস্যা। জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, বাংলাদেশে দুটি গণভোট ২১ ও ১৭ দিনে হয়েছে। তাই গণভোট নভেম্বরের ১৫ তারিখে করা যায়। এটি জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবেও দেখা যেতে পারে। অনেকে বলবেন গণভোট হলে জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটা অনিশ্চিত। আমরা ও ভিন্ন যুক্তি দিতে পারি। আমরা মনে করি এটা টেস্ট হিসেবে দেখে তাদের সক্ষমতা যাচাই করা যেতে পারে। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ডা. তাহের বলেন, দাবি আদায়ের জন্য যা যা দরকার আমরা করবো। জনগণের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে। আমরা বিএনপিকে বলবো আলোচনায় বসেন। এ সময় জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটি এম মাছুম বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির পরই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। সরকার একটি দলের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ভারসাম্য নেই। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারছে না। বিগত দিনের খুনি, লুটেরা ও অর্থ পাচারকারীদের বিচার জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল লুটপাটের সঙ্গে জড়িত। তাই তাদেরও বিচার করতে হবে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের আগে সংস্কার করতে হবে। পুরাতন সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে পিআর পদ্ধতিতে ভোট দিতে হবে। সবার ভোটের মূল্যায়ন করতে হবে। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশ নতুন পরিচয় পেয়েছে। ১ হাজার ৪০০ মানুষ শহীদ হয়েছেন। সংস্কার, বিচারসহ ৫টি মৌলিক দাবি মানতে হবে। দেশে আর কোনো দিন ফ্যাসিবাদের জায়গা হবে না। জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মানববন্ধন কর্মসূচি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন মোড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন। একই কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ৭টি দল।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button