শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

# ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে #
# আমদানীকৃত পণ্য পুড়ে ছাই #
# আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস ও তিন বাহিনীর জোরালো প্রচেষ্টা অব্যহত
প্রবাহ রিপোর্ট ঃ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার দুপুর আড়াউটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের একটি গুদামে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে অংশ নেন। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। সর্বশেষ রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত আগুনের তীব্রতা কিছুটা কমলেও পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে ছিল। কার্গোর সব কাপড়চোপড় ও কেমিক্যাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার কর্মচারীরা। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট এলাকায় পার্কিং স্ট্যান্ড ১৪’র কাছে কার্গো কমপ্লেক্সের পাশে আগুনের ঘটনাটি ঘটে বলে প্রাথমিক সূত্রে জানা গেছে। এক পর্যায়ে আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সবশেষ তথ্যানুযায়ী, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট কাজ করছিল। এছাড়াও সিভিল অ্যাভিয়েশন, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর ইউনিটগুলোও আগুন নেভানোর চেষ্টায় যুক্ত হয়েছিল। বিমানবন্দরের সিএন্ডএফ (কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এক কর্মচারী গণমাধ্যমকে বলেন, কার্গোর সব কাপড়চোপড় ও কেমিক্যাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগামী কয়েক মাস হয়তো আমরা কোনো কাজই করতে পারব না। সরেজমিন দেখা যায়, বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের সামনে উৎসুক জনতা ভিড় জমিয়েছে। আগুনকে কেন্দ্র করে অপ্রীতির ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান করছেন। এদিকে, আগুনের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। গতকাল শনিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আসেন তিনি। এছাড়া, অগ্নিকা-ের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। এদিকে, অগ্নিকা- নিয়ন্ত্রণে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। বিমান বাহিনীর অগ্নিনির্বাপণের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অগ্নিনির্বাপণে কাজ শুরু করে বলে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, আগুনের ঘটনায় আনসার বাহিনীর অন্তত ২৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। আগুন নেভাতে গিয়ে তারা ধোঁয়া ও তাপের কারণে দগ্ধ এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যায় পড়েছেন। তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতাল ও কুর্মিটলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আনসার ও ভিডিপির গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকুজ্জামান। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থলে আমাদের এক হাজার সদস্য কাজ করছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেওয়ার সময় ২৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে নয়জনকে সিএমএইচে এবং বাকিদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে আনসারের উত্তর জোন কমান্ডার মো. গোলাম মৌলাহ তুহিন বলেন, আমাদের সদস্যরা আগুন লাগার প্রাথমিক পর্যায়েই বিষয়টি শনাক্ত করে দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরে তারা নিজেরাই ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার ও প্রাথমিক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অংশ নেয়। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী আগুনের এ ঘটনার সার্বিক তদারকি করছে এবং আহত সদস্যদের চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।