চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইন নির্মাণে ৬৮৮ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার রেললাইন উন্নয়ন ও নির্মাণে বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মধ্যে গতকাল সোমবার ৬৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ঢাকায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জং নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এডিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দক্ষিণ এশীয় উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (সাসেক) চট্টগ্রাম দোহাজারী রেলওয়ে প্রকল্পের আওতায় ৩৫ কিলোমিটার রেলপথ উন্নয়নের পাশাপাশি ২ দশমিক ৫ কিলোমিটার বাইপাস রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এর ফলে চট্টগ্রাম স্টেশনে না থেমেই ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল সম্ভব হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার করিডোরে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে, যা আঞ্চলিক পরিবহন দক্ষতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জং বলেন, এই প্রকল্প ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে রেলসেবার স্থিতিশীলতা, নির্ভরযোগ্যতা ও দক্ষতা বাড়াবে এবং সড়ক পরিবহনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে রেলমুখী পরিবহন ব্যবস্থায় রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করবে। তিনি আরও বলেন, এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার করিডোরে অর্থনৈতিক কর্মকা-কে গতিশীল করবে, বিশেষ করে পর্যটন ও মৎস্য শিল্পকে উৎসাহিত করবে। অগ্রাধিকার বিনিয়োগ হিসেবে প্রকল্পটি কক্সবাজার অঞ্চলের অনাবিষ্কৃত এলাকাগুলোতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে উদ্দীপিত করবে। এছাড়া এটি বাংলাদেশ রেলওয়ে নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করবে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবহন ও ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে দেশের সক্ষমতা বাড়াবে। ট্রান্স-এশিয়া রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার করিডোর বর্তমানে দেশের মোট যাত্রী পরিবহনের ৩২ শতাংশ এবং মালবাহী পরিবহনের ৫৫ শতাংশ বহন করে। তাই উন্নত রেল অবকাঠামো অর্থনৈতিক সংহতি, লজিস্টিকস অপ্টিমাইজেশন এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলসহ দেশের উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে রেলপথ উঁচুকরণ, উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, আধুনিক সিগন্যালিং, ডুয়াল গেজ রেললাইন স্থাপন এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব ৩০টি নতুন লোকোমোটিভ সংগ্রহ। এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ের জনবল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরিচালন সক্ষমতা বাড়ানো হবে এবং তিনটি স্টেশন উন্নয়ন করে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ব্যবহারবান্ধব সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। যেখানে বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সুযোগও থাকবে। এডিবি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তাকারী একটি শীর্ষস্থানীয় বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিবির সদস্য সংখ্যা ৬৯টি, যার মধ্যে ৫০টি এ অঞ্চলের দেশ।



