ভাসানী ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি: অধ্যাপক সিরাজুল

প্রবাহ রিপোর্ট : মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী কখনোই ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি মন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রদূত হতে চাননি; বরং মেহনতি মানুষের মুক্তির সংগ্রামে আজীবন নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘বি-উপনিবেশায়ন ও মওলানা ভাসানী’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (কারাস) এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, উপমহাদেশে অনেক বিখ্যাত রাজনীতিবিদের জন্ম হলেও ভাসানী ছিলেন স্বতন্ত্র ও অসাধারণ। তার মতো মেহনতি মানুষের সমর্থনে রাজনীতি করা দ্বিতীয় কোনো মানুষ এ অঞ্চলে দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেন, ভাসানী ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে বিশ্বাস করতেন না, বরং সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি পাকিস্তানকে বিভিন্ন জাতিসত্তার কারাগার হিসেবে দেখতেন এবং শুধু বাঙালি নয়, বরং পাঞ্জাবি, সিন্ধি ও বেলুচসহ সব শোষিত জাতিসত্তার মুক্তির কথা বলতেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, মওলানা ভাসানী কেবল রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন একটি নৈতিক কণ্ঠস্বর ও রাষ্ট্রীয় বিবেক। তিনি বিশ্বাস করতেন রাজনৈতিক স্বাধীনতা তখনই অর্থবহ, যখন তা মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারে। তার আপসহীন চেতনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে যে, বিশ্ববিদ্যালয় হবে সত্য বলার সাহস দেখানোর জায়গা। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ইউনিভার্সিটি ব্রুনাই দারুসসালাম-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. ইফতেখার ইকবাল। তিনি বলেন, মওলানা ভাসানীকে আমাদের বোঝার এখনো অনেক বাকি। তিনি ভাসানীর কর্ম ও দর্শন নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। স্বাগত বক্তব্যে কারাস-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন মওলানা ভাসানীকে বিশ্বপর্যায়ের অন্যতম অভিজ্ঞ ও প্রজ্ঞাবান নেতা হিসেবে অভিহিত করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক আহমেদ কামাল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১২টায় খ্যাতিমান আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুনের বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলের অধিবেশনে মওলানা ভাসানীর জীবন ও দর্শন নিয়ে বিভিন্ন গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন দেশি-বিদেশি গবেষকরা।



