হতাশার পরও ‘খুবই সফল সিরিজ’ ছিলো : হাথুরুসিংহে

স্পোর্টস ডেস্ক : শেষটা মনমতো হয়নি। সিরিজ জয়ের হাতছানি মিলিয়ে গেছে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। সেই হতাশা আছে বাংলাদেশ দলের। তবে গোটা সফরে তাকিয়ে তৃপ্তির দোলা অনুভব করছেন চান্দিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশ কোচের চোখে এবারের নিউ জিল্যান্ড সফর তাদের জন্য দারুণভাবে সফল। গত বছরের আগ পর্যন্ত নিউ জিল্যান্ডে তিন সংস্করণ মিলিয়ে কিউইদের বিপক্ষে ৩৩ ম্যাচ খেলে একটি জয়ও ছিল না বাংলাদেশের। প্রথম জয়টি আসে এমন এক সংস্করণে, যা ছিল সবচেয়ে অভাবনীয়। গত বছরের জানুয়ারিতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে চমকপ্রদ পারফরম্যান্সে জিতে যায় মুমিনুল হকের দল। এরপর যথারীতি সেখানে পরাজয়ের ধারা আবার চলতে থাকে। এবারের সফরেও প্রথম দুই ওয়ানডে জিতে সিরিজ জিতে নেয় নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশের প্রাপ্তির শুরু এরপরই। শেষ ওয়ানডেতে কিউইদের বিপক্ষে তাদের মাঠেএই সংস্করণে প্রথম জয়ের স্বাদ মেলে। এরপর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ধরা দেয় জয়। এই সংস্করণে যেটি সেখানে বাংলাদেশের প্রথম। নিউ জিল্যান্ডে কোনো সংস্করণেই আর জয় অধরা নেই বাংলাদেশের। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বেশ আঁটসাঁট বোলিং করছিল বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু ম্যাচটি ভেস্তে যায় বৃষ্টিতে। শেষ ম্যাচে রোববার বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ¯্রফে ১১০ রানে। সেই পুঁজি নিয়েও তারা লড়াইয়ে হাল ছাড়েনি। ৪৯ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলে দারুণভাবে। তবে শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি। বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচ জিতে সিরিজ ড্র করে কিউইরা। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহে বললেন সেই হতাশার কথা। পরাজয়ের দায় দিলেন তিনি ব্যাটসম্যানদের। “দুই ওভার পরই আমরা আলোচনা করেছি যে, এটা ১৬০ রানের উইকেট নয়। ১৪০-১৫০ রানের উইকেট এটা। তবে আমরা সেটাও করতে পারিনি। ভালো ব্যাট করিনি আমরা। রানের ঘাটতি আমাদের ছিল। তার পরও বোলাররা আমাদেরকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিল। সিরিজজুড়ে আমরা যেভাবে বল করেছি, দারুণ ছিল তা।” “অবশ্যই তারা (ক্রিকেটাররা) হতাশ। আমরা সবাই জিততে চাই। এজন্যই এই খেলাটা আমরা খেলি। জয়ের সুযোগ আমরা নিজেদেরকে দিয়েছিলাম। তবে যেমন বলেছি, এই উইকেটে যথেষ্ট রান আমরা করতে পারিনি। তবে শেষের হতাশা পাশে সরিয়ে বৃহত্তর ছবিটায় তাকিয়ে সন্তুষ্টিই খুঁজে পাচ্ছেন বাংলাদেশ কোচ। “সিরিজের শুরুতে আমরা কথা বলেছি যে, আগে আমরা এখানে কেমন করেছি এবং এবার আরও ভালো কিছু করতে চাই। সেদিক থেকে বলব এটা খুবই সফল সফর।” ২০১৬-১৭ মৌসুমে হাথুরুসিংহের কোচিংয়েই নিউ জিল্যান্ড সফরে তিন ওয়ানডে, তিন টি-টোয়েন্টি ও দুই টেস্টের সবকটি হেরেছিল বাংলাদেশ। ব্যর্থতার সেই ধারা দেখা গেছে পরেও একের পর এক সফরে। এবার আর খালি হাতে ফিরছে না দল। আগে বারবার ব্যর্থ হওয়ার দলগুলির সঙ্গে এবারের দলের পার্থক্য তুলে ধরলেন হাথুরুসিংহে। “ক্রিকেটারদের মানসিকতা এখানে বড় ভূমিকা রেখেছে। এই তরুণ দলটির কোনো ভয়ডর নেই। মাঠে নেমে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়।” “আরেকটা ব্যাপার হলো, শান্তর নেতৃত্ব। সে অসাধারণ ছিল। ট্যাকটিক্যালি সে নিখুঁত ছিল। ক্রিকেটারদেরকে বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব স্বচ্ছ ছিল- তারা কী আশা করতে পারে এবং তাদের কাছ থকে তার প্রত্যাশা কী। এছাড়াও এবার মৌলিক ব্যাপারগুলি আমরা আগের চেয়ে লম্বা সময় ধরে ঠিকঠাক করেছি।” এই সিরিজের পর আপাতত দুই মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিরতি বাংলাদেশের। ক্রিকেটাররা সামনে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন বিপিএল নিয়ে। আগামী ১৯ জানুয়ারি শুরু হবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এই আসর। জাতীয় দলের পরের সিরিজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মার্চে। দেশের মাঠে সেই সিরিজে আছে দুই টেস্ট, তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি।