খেলাধুলা

সমালোচনা উড়িয়ে দিলেন কোহলি

স্পোর্টস ডেস্ক : ভিরাট কোহলির ব্যাট এ দিন উত্তাল ছিল বেশ। ১৫৯ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে বল উড়িয়েছেন মাঠের নানা প্রান্তে। ম্যাচ শেষে তিনি জ¦লে উঠলেন মাইক্রোফোন হাতেও। সেখানে তিনি ছারখার করে দিতে চাইলেন স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনাকারীদের। সঞ্চালকের প্রশ্ন যদিও ছিল ভিন্ন, কিন্তু তিনি সেখানে জবাব দিলেন স্ট্রাইক রেটের প্রসঙ্গ টেনে এনে। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে রোববার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ৯ উইকেটের জয়ে নায়কদের একজন কোহলি। ২০১ রান তাড়ায় তিনিই মূলত এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। তবে শেষদিকে দুই ওভারের তা-বে শতরান করে আলোটা কেড়ে নেন উইল জ্যাকস। ৩১ বলে ফিফটি ছোঁয়া ইংলিশ ব্যাটসম্যান পরের ১০ বলেই পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে। কোহলি অপরাজিত রয়ে যান ৪৪ বলে ৭০ রান করে। এই ইনিংস দিয়ে একটি মাইফলকও ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। এবারের আইপিএল সবার আগে পৌঁছে যান ৫০০ রানের ঠিকানায়। টুর্নামেন্টে ৪৫০ রানও করতে পারেননি এখনও পর্যন্ত আর কেউ। তবে সেই ধাবাহিকতার প্রশংসার চেয়ে তার সমালোচনাই বেশি হচ্ছে স্ট্রাইক রেট নিয়ে। এই যুগের যে ধারা বা এবারের আইপিএলে ব্যাটিংয়ে যে দাবি, সেটা তিনি মেটাতে পারছেন না কিনা, প্রশ্নটি তুলছেন অনেকেই। কালকের ইনিংসের পর তার স্ট্রাইক রেট ১৪৭.৪৯। টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত অন্তত আড়াইশ রান করা ২৩ ব্যাটসম্যানের মধ্যে কেবল তিন জনের স্ট্রাইক রেট কোহলির চেয়ে কম – সাই সুদার্শান, লোকেশ রাহুল ও শুবমান গিল। রোববারের ম্যাচে তার ব্যাটিং নিয়ে অবশ্য প্রশ্নের অবকাশ নেই। তবে আগের ম্যাচগুলোর কয়েকটিতে তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে যে নানা আলোচনা হয়েছে, তা কোহলির কানেও পৌঁছেছে। সেটির উত্তাপও পাওয়া গেল তার কণ্ঠে। ম্যাচ শেষে ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার মুরালি কার্তিক প্রশ্ন করেন, “১৭ আসরে সপ্তমবার ৫০০ রান, বাকি ১০ আসরে ৪০০ রানের বেশিৃ আপনি কি এসব সংখ্যায় কখনও তাকিয়ে দেখেন?” এই প্রশ্নেই কোহলি টেনে আনেন স্ট্রাইক রেটের প্রসঙ্গ। “সত্যি বলতে, নাহ (তাকিয়ে দেখি না)ৃযারা আমার স্ট্রাইক রেট ও স্পিন ভালো খেলি না বলে কথা বলে, তারা এসব নিয়ে কথা বলতেই ভালোবাসে। তবে আমার জন্য ব্যাপারটি হলো ¯্রফে দলের জন্য ম্যাচ জেতা। ১৫ বছর ধরে যে কাজটা করে আসছি, নিশ্চয়ই সেটার পেছনে কারণ আছেৃ দিনের পর দিন এটা করছেন, দলকে জেতাচ্ছেন।” “এবং আমি ঠিক নিশ্চিত নই, আপনি নিজে কখনও এই পরিস্থিতিতে ছিলেন কি না যে বক্সে বসে ম্যাচ নিয়ে কথা বলতে পারেন। আমার সত্যিই মনে হয় না, এটা একই ব্যাপার। আমার কাছে ব্যাপারটা হলো ¯্রফে নিজের কাজ করে যাওয়া। লোকে খেলাটা নিয়ে তাদের ধারণা ও অনুমান নিয়ে কথা বলতেই পারে। কিন্তু দিনের পর দিন যারা কাজটা করে, তারাই জানে কী হচ্ছে সেখানে। আমার জন্য এখন এটা অনেকটা ‘মাসল মেমোরির’ ব্যাপার।” স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনায় বিরক্ত হলেও এ দিন উইল জ্যাকসের ব্যাটিং দারুণ উপভোগ করেছেন কোহলি। শুরুতে যদিও টাইমিং ঠিকঠাক হচ্ছিল না জ্যাকসের। একপর্যায়ে ১৭ বলে তার রান ছিল ১৭। এরপর মোহিত শার্মার বলে ছক্কা মারার পরই যেন নিজের বিধ্বংসী রূপ ফিরে পান। এরপর ঝড়ের বেগে ছুটতে থাকেন। ওই ওভারে বাউন্ডারি মারেন আরেকটি। একটু পর ফিফটি করে ফেলেন ৩১ বলে। এরপর তো ¯্রফে তা-ব চালান তিনি। মোহিতের এক ওভারে মারেন তিন ছক্কা ও দুই চার। ওভার থেকে আসে ২৯ রান। এরপর রাশিদ খানের এক ওভারে মারেন অবিশ্বাস্যভাবে চার ছক্কা ও এক চার। টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে কঠিন বোলারদের একজন এই আফগান লেগ স্পিনারের ওভার থেকেও আসে ২৯ রান! ১৩ ওভার শেষে কোহলির রান ছিল ৬৯, জ্যাকসের ৪৪। পরের দুই ওভারের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে কোহলিকে ৭০ রানে রেখেই জ্যাকস পৌঁছে যান শতরানে। ইংলিশ ব্যাটসম্যানের ১০ ছক্কার ইনিংসটি আরেকপ্রান্ত থেকে উপভোগ করতে পেরেই উচ্ছ্বসিত কোহলি। “ব্যাটিংয়ে আসার পর শুরুর দিকে সে একটু বিরক্ত ছিল যে, নিজের চাওয়া মতো শট খেলতে পারছে না। তবে আমাদের একমাত্র আলোচনা ছিল নিজের ওপর আস্থা রেখে যাওয়া ও নিবেদন ধরে রাখাৃ কারণ আমরা জানি, কতটা বিস্ফোরক সে হতে পারে।” “মোহিতের বিপক্ষে ওই বড় ওভারটির পর আমার ভূমিকাও বদলে যায়। পুরোপুরিই বদলে যায় আমার ভূমিকা। আমি সত্যিই খুশি যে অন্য প্রান্ত থেকে উপভোগ করতে পেরেছি। ভেবেছিলাম যে ১৯তম ওভারে খেলা শেষ করব। কিন্তু ১৫ ওভারে খেলা শেষ করে দেওয়া অসাধারণ ব্যাপার। যে কারও দেখা সেরা টি-টোয়েন্টি শতকগুলোর একটি এটি এবং অন্য প্রান্তে কাছ থেকে দেখতে পেরে আমি খুবই খুশি।”

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button