খেলাধুলা

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে টানা ৩০ বছরের আধিপত্য ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক : ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘ তিন দশকের একাধিপত্য ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া। গ্রেনাডার ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে গত রোববার শেষ হওয়া তিন ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে স্বাগতিকদের ১৩৩ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে প্যাট কামিন্সের দল।
১৯৯৫ সালে মার্ক টেইলরের নেতৃত্বে রিচি রিচার্ডসনের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে স্যার ফ্র্যাঙ্ক ওরেল ট্রফি নিজেদের করে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই থেকে আর হাতছাড়া হয়নি ঐতিহ্যবাহী এই ট্রফি। এই ৩০ বছরে মোট ১৪টি সিরিজের মধ্যে ১২টি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, বাকি দুটি ড্র হয়েছে।
গ্রেনাডার এই টেস্টে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে তোলে ২৮৬ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজও প্রথম ইনিংসে মোটামুটি লড়াই করে তুলতে পেরেছিল ২৫৩ রান। ফলে ৩৩ রানের স্বল্প লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে অসিরা। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ৭ উইকেটে ২২১ রান করে অস্ট্রেলিয়া, ২৫৪ রানে এগিয়ে থেকে দিন শেষ করে তারা।
রোববার চতুর্থ দিনে বাকী ৩ উইকেটে মাত্র ২২ রান যোগ করে ২৪৩ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। অ্যালেক্স কেয়ারি ২৬ রান নিয়ে দিন শুরু করলেও থামেন ৩০ রানে। ইনিংসের শেষ দিকে লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা বড় অবদান রাখতে পারেননি। শামার জোসেফ এই ইনিংসে আরও ২টি উইকেট নিয়ে ম্যাচে মোট ৪ উইকেট দখল করেন। দুই টেস্টে তার শিকার হলো ১৪টি উইকেট। দশ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে তার মোট উইকেট সংখ্যা দাঁড়াল ৪৩, এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার টেস্টেই শিকার ২৭টি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৭ রান। কিন্তু শুরু থেকেই ভেঙে পড়ে তাদের ব্যাটিং। দ্বিতীয় ওভারেই শূন্য রানে জন ক্যাম্পবেলকে ফিরিয়ে দেন জশ হেইজেলউড। মিচেল স্টার্ক দ্রুত বিদায় করেন তিন নম্বরে নামা কেসি কার্টিকে। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের শততম টেস্টও রঙহীন থেকে যায়। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি ফিরেন মাত্র ৭ রানে। পুরো সিরিজে তার রান মাত্র ১৫। গত অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে এই সিরিজ পর্যন্ত ২৮ ইনিংসে তার ফিফটি এসেছে মাত্র দুটি, যা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
প্রথম ইনিংসে ৭৫ রান করা ব্র্যান্ডন কিং এবার থামেন ১৪ রানে, কামিন্সের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে। সেই সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ৪ উইকেটে ৩৩। পঞ্চম উইকেটে শেই হোপ ও রোস্টন চেইস কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও জুটি ভাঙে ৩৮ রানে। অধিনায়ক চেইস করেন সর্বোচ্চ ৩৪ রান, দুই ছক্কা হাঁকিয়ে। এরপর আর কোনো জুটি ৩০ রানের কোঠা ছুঁতে পারেনি। শেষদিকে আলজারি জোসেফ দুটি ছক্কায় ১৩ রান করেন, আর শামার জোসেফ তিনটি ছক্কায় ২৪ রান তুলে কিছুটা লড়াইয়ের আভাস দেন।
শেষ তিনটি উইকেট তুলে নেন ন্যাথান লায়ন। গ্লেন ম্যাকগ্রাকে ছাড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হতে তার প্রয়োজন আর মাত্র দুটি উইকেট।
ম্যাচে দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৬৩ ও ৩০ রান করে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন অ্যালেক্স কেয়ারি।
সিরিজের শেষ টেস্ট শুরু হবে গত শনিবার জ্যামাইকায়। এটি ক্যারিবিয়ায় দ্বিতীয় দিন-রাতের টেস্ট হতে যাচ্ছে। যদি বিশ্রাম না দেওয়া হয়, তবে সেটিই হবে মিচেল স্টার্কের শততম টেস্ট।
অস্ট্রেলিয়ার এমন দাপুটে পারফরম্যান্স আবারও প্রমাণ করল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে তাদের ৩০ বছরের আধিপত্য এখনও অক্ষুণ্ণ।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button