৪ বছরে ১০ গুণ বেড়েছে বিশ^কাপের টিকিটের দাম, ক্ষোভে ফুঁসছে ফুটবলপ্রেমীরা

স্পোর্টস ডেস্ক : ফুটবল বিশ^কাপ মানেই সারা পৃথিবীর কোটি ভক্তের উন্মাদনা। কিন্তু ২০২৬ সালের আসর সেই উন্মাদনাকে ছাপিয়ে এখন আলোচনায় টিকিটের ভয়াবহ দাম। মাত্র চার বছরের ব্যবধানে কাতার বিশ^কাপের তুলনায় টিকিটের দাম বেড়েছে প্রায় দশ গুণ-যা সাধারণ দর্শকদের নাগালের অনেক বাইরে চলে গেছে।
২০২২ সালের কাতার বিশ^কাপে উদ্বোধনী ম্যাচের সবচেয়ে সস্তা টিকিটের দাম ছিল ৫৫ ডলার। কিন্তু উত্তর আমেরিকায় হতে যাওয়া ২০২৬ বিশ^কাপের জন্য সেই টিকিটের দাম দাঁড়িয়েছে ৫৬০ ডলার। অর্থাৎ, এবারের সবচেয়ে সস্তা টিকিটের দামই আগের আসরের সবচেয়ে দামী আসনের সমান!
গ্রুপ পর্বের ম্যাচের টিকিটের দাম বেড়েছে নয়গুণ-আগে যা ছিল ১১ ডলার, এখন তা ১০০ ডলার। ফাইনালের ক্ষেত্রেও বেড়েছে অভাবনীয় হারে। কাতার বিশ^কাপে ফাইনালের সবচেয়ে সস্তা টিকিট ছিল ২০৬ ডলার, ২০২৬ বিশ^কাপে তা লাফিয়ে উঠেছে ২,০৩০ ডলারে। আর সবচেয়ে দামী টিকিটের মূল্য পৌঁছেছে ৬,৩৭০ ডলার পর্যন্ত।
এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই অভিযোগ করছেন, বিশ^কাপ এখন “ধনীদের বিনোদন”হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ লিখেছেন, “যে টুর্নামেন্ট সবার, সেটি এখন কেবল ধনীদের জন্য সংরক্ষিত।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিফার নতুন ‘ডাইনামিক প্রাইসিং’ নীতিই এই বিপুল দামবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এই নীতিতে টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হবে চাহিদা অনুযায়ী-যে ম্যাচে চাহিদা বেশি, সেখানে টিকিটের মূল্য ক্রমাগত বাড়বে। উত্তর আমেরিকার বাজারে এটি প্রচলিত হলেও আন্তর্জাতিক ভক্তদের জন্য তা হবে বড় বাধা। কারণ, তারা আগেভাগে পরিকল্পনা না করে শেষ মুহূর্তে টিকিট কিনতে পারবেন না।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে টিকিট পুনর্বিক্রিতে নতুন ফি কাঠামো। ফিফা এখন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ করে সার্ভিস চার্জ নিচ্ছে। এতে বৈধ পথে টিকিট কেনাবেচার খরচ আরও বেড়ে যাচ্ছে।
সব মিলিয়ে ফুটবলবিশে^র অনেকে মনে করছেন, ২০২৬ সালের এই আসরই হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ^কাপ। মাঠে দর্শকের উল্লাসে নয়, বরং টিকিটের দামে এবার বিশ^কাপ ইতিহাস গড়তে পারে।