স্থানীয় সংবাদ

ডুমুরিয়া একে-বিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

জেলা প্রশাসক ও (মাউশি) বরাবর লিখিত অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ডুমুরিয়া উপজেলার আধার মানিক গ্রামে অবস্থিত একে বিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সরদারের বিরুদ্ধে স্কুলে নিয়োগ বাণিজ্য অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রভাত কুমার মন্ডল নামে এক ভুক্তভোগী তিনি গত ৩ অক্টোবর খুলনা জেলা প্রশাসক ও উপ-পরিচালক( মাউশি )বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায় গেল ১৪ নভেম্বর ২০২৩ খুলনার একটি স্থানীয় পত্রিকায় স্কুলে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সেখানে প্রধান শিক্ষক অফিস সহায়ক ও আয়া পদের জন্য আবেদন চাওয়া হয়। প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সরদার নিজে উক্ত পদে কৌশলে বহাল থাকে কারণ স্কুলের নিয়োগ এ প্রধান শিক্ষকের একটিও আবেদপত্র জমা পড়ে নাই। বাকি দুটি পদের একাধিক প্রার্থীর নিকট থেকে আবেদন গ্রহণ করে। ভুক্তভোগী প্রভাত কুমার মন্ডল এর স্ত্রী রিনা রানী মন্ডল উক্ত আয়া পদে একজন প্রার্থী ছিলেন। তখন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন বিষ্ণুপদ মন্ডল । সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সর্দারের যৌথ প্রচেষ্টা থাকে ভুক্তভোগীর স্ত্রীকে আয়া পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য । এছাড়া আমার স্ত্রীর চাকরির জন্য ৯ লক্ষ টাকা মৌখিক চুক্তিতে ছয় লক্ষ টাকা নেয় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি । এসব টাকা শিক্ষা অফিসার, থানা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং তখনকার ভূমি মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে নেয় বলে ভুক্তভোগী জানিয়েছে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য প্রত্যক্ষদর্শী দেবাশীষের মাধ্যমে লেনদেন হয়। এমনকি গরু-ছাগল বিক্রি , এফডিআর ভাঙ্গিয়ে এবং চড়া সুদে টাকা এনে দেয় প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সর্দারকে। পরীক্ষার দিন ধার্য ছিল চলতি বছরে ২২ শে জুন নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় বিথীকা রানী নামের অন্য একজন প্রার্থীর কাছ থেকে রিনা রানী মন্ডলের থেকে বেশি টাকা নিয়ে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেছে প্রধান শিক্ষক। বিথীকা রানী আয়া পদে স্কুলে বর্তমানে চাকরি করছে। ভুক্তভোগীর স্ত্রীর চাকরি না হাওয়ায় প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকা ফেরত চায় প্রভাত মন্ডল। আংশিক কিছু টাকা ফেরত দিলেও বাকি টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে তালবাহানা করে। তিনি আরও বলেন, আমি দিনমজুরি খেটে খাওয়া মানুষ। এমনকি আমার স্ত্রী রিনা রানী মন্ডল ও টাকা চাইতে গেলে তাকে ও লাঞ্ছিত করে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং বিভিন্ন লোকের কাছে বিষয়টি নিয়ে সমাধানের জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় । আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সত্য নয় । তিনি রিনা রানী মন্ডলের আয়া পদে চাকরি দেওয়ার জন্য আংশিক টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করে। অন্যদিকে অধিক টাকা নিয়ে যাকে আয়া পদে চাকরি দেয়া হয়েছে, বিথীকা রানী তার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা ও স্বীকার করেন। বিথীকা রানীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমি আয়া পদে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছি সেটা স্কুল ফান্ডে আছে। স্কুলের শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য শিক্ষকদের দাবি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্কুলের কোন উন্নতি এখনো পর্যন্ত হয় নাই । স্কুলের নিয়োগের একটি টাকা স্কুলের উন্নয়নের জন্য স্কুল ফান্ডে তার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীপক কুমার সর্দার তার একাউন্ট থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা স্কুল ফান্ডে দিয়ে সিংহভাগ টাকা সে আত্মসাৎ করেছে বলে শিক্ষকদের অভিযোগ। ভুক্তভোগীর স্ত্রী রিনা রানী মন্ডল বলেন, আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দ্বিতীয় দিন ইন্ডিয়া চলে যায়। ভারতের আধার কার্ড ধারি একই সাথে দুই দেশের নাগরিকত্বের সুবিধা ভোগ করে । স্কুলের নিয়োগে চরম অনিয়ম এবং নিয়োগ বাণিজ্যে দুর্নীতি হয়েছে। আমি পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার কাগজপত্র ঠিক আছে। আমি প্রকৃতপক্ষে আয়া পদে চাকরির দাবিদার। আমাকে চাকরি না দিয়ে অন্যজনকে দিয়েছে আর এখন টাকা ফেরত দিচ্ছে না। যদিও অভিযোগ দেওয়ার পর এবং স্কুলে গণমাধ্যম কর্মীরা আসার পর প্রধান শিক্ষকের পক্ষ থেকে একটি মাধ্যমে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে কিন্তু এখনো পরিশোধ করে নাই। আমার দেওয়া টাকা ফেরত সহ প্রধান শিক্ষক ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা ,তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আই টি সাদিয়া আফরিনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, অভিযোগটি আমরা পেয়েছি ।বিষয়টি নিয়ে জেলাপ্রশাসক মহাদয়ের অনুমতিপূর্বক তদন্ত কমিটি গঠণ করব। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ব্যাপারে ( মাউশি) উপ-পরিচালকের বর্তমানে যিনি দায়িত্বে আছেন, জেলা শিক্ষা অফিসার ফারহানা নাজ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখব এবং এর সাথে প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ যারা জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব । তিনি আরো বলেন যেহেতু প্রধান শিক্ষকের একটিও আবেদন পড়ে নাই এবং অন্য দুটি পদের নিয়োগের বিষয়ে অভিযোগ হয়েছে, এমপিও ভুক্ত হওয়ার বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখব ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button