জাতীয় সংবাদ

আর্থিক স্থিতিশীলতা জোরদারে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৫০ কোটি ডলার

প্রবাহ রিপোর্ট : বাংলাদেশে সুশাসন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি নতুন উন্নয়ন সহায়তা অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ‘গভর্নেন্স ও প্রাতিষ্ঠানিক সহনশীলতা জোরদার নীতিগত ঋণ কর্মসূচি’ শীর্ষক এই অর্থায়ন কার্যক্রমটি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। যার মধ্যে রয়েছে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, আর্থিক খাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা জোরদার এবং সরকারি ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ। বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে টেকসইভাবে এগিয়ে নিতে হলে সরকারি অর্থ ব্যয় ব্যবস্থাপনার উন্নতি অপরিহার্য। সরকার যেসব সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি ও জনসেবার মানোন্নয়নে সহায়ক হবে। বাংলাদেশ বর্তমানে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সর্বনি¤œ রাজস্ব-জিডিপি অনুপাতে রয়েছে, যা সরকারের জনগণের জন্য মানসম্মত সেবা দেওয়ার সক্ষমতাকে সীমিত করে রাখে। নতুন এই কর্মসূচির আওতায় কর প্রশাসন ও নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। কর ছাড় প্রদানে সংসদের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করে তোলা হবে, যা বর্তমানে খ-কালীন ও অসংগঠিত পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটাবে। এছাড়া আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে করপোরেট গভর্নেন্স ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কাঠামো আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হবে। ব্যাংক খাতে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংককে পূর্ণাঙ্গ রেজুলেশন ক্ষমতা প্রদান করা হবে। সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে ২০২৭ সালের মধ্যে সহ প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হবে। ইলেকট্রনিক সরকারি ক্রয় (ই-জিপি) ব্যবস্থা সর্বত্র বাধ্যতামূলক করা হবে, উপকারভোগীর প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ ও দর সীমা তুলে নেওয়ার মতো উদ্যোগে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং দুর্নীতির ঝুঁকি কমবে। একইসঙ্গে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের নিরীক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, যা আর্থিক জবাবদিহিতা আরও দৃঢ় করবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করে ডেটা স্বচ্ছতা বাড়ানো হবে, যাতে সেবার মান উন্নত হয়। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা নিশ্চিত করতে একটি ডায়নামিক সামাজিক নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করা হবে। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্প পরিচালক ধ্রুব শর্মা বলেন, এই অর্থায়ন বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে রাজস্ব আহরণ, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা এবং সরকারি সেবার মানোন্নয়নে সরকারের সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে গতি আসবে। এই অর্থায়নের মাধ্যমে ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের মোট নতুন প্রতিশ্রুতি দাঁড়ালো ৩ দশমিক ০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংক প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার অনুদান, সুদমুক্ত ও স্বল্পসুদে ঋণ দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button