সম্পাদকীয়

আসছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ। করোনার ওমিক্রন ধরনের নতুন উপধরন জেএন.১ বিশ্বজুড়ে এ সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। বলতে গেলে খুবই দ্রুত বেগে বাড়ছে সংক্রমণের হার। এই ভ্যারিয়েন্ট দ্রুততার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এরইমধ্যে ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু দেশে এ ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান মিলেছে। ভারতে গত ৪৮ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাত জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নতুন করে ৬৪০ জন করোনা সংক্রমিত খুঁজে পাওয়া গেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ভারতে এখন ২,৯৯৭ জন কোভিড আক্রান্ত রয়েছেন। এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত নভেম্বরের শুরুতে জিএন.১ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ছিল প্রায় ৩ শতাংশ। কিন্তু এক মাসে এটির বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার হার ২৭ দশমিক ১। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়া ভ্যারিয়েন্ট এটি। এতে শতকরা ১৫ থেকে ২৯ ভাগ সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। করোনার এই নতুন ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, কানাডা, ব্রিটেন এবং সুইডেনে সবচেয়ে বেশি। দ্রুত ছড়ানোর কারণে এটিকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ল্যাবে পরীক্ষায় বর্তমানে শতকরা প্রায় ৭ ভাগ মানুষের শরীরে কোভিড পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। শীতে এই ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুততার সঙ্গে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। বিএ.২.৮৬ ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় স্পাইক প্রোটিনে নতুন করে বিবর্তন দেখা দিচ্ছে। এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনার এই ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের কারণে চীনে ব্যাপক হারে প্রাণহানি ঘটছে। বর্তমানে চীনে করোনায় ১ লাখ ১৯ হাজার আক্রান্ত রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৭ হাজার খুবই গুরুতর। যদিও বর্তমানে এ করোনার এই ধরনটির সংক্রমণজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি কম এবং বিদ্যমান টিকাগুলোই এ ধরন থেকে মানুষকে সুরক্ষা দেবে। তারপরও সবাইকে নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা। জনবহুল এলাকাগুলোতে মাস্ক পরতে হবে, হাঁচি-কাশির সময় মুখ বন্ধ রাখতে হবে, যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, নিয়মিত হাত পরিষ্কার করতে হবে, কোভিড ও ফ্লু টীকা সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট খবর রাখতে হবে, অসুস্থ হলে বাসায় থাকতে হবে এবং লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষা করাতে হবে। সর্বোপরি একটু সচেতনতাই পারে এই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে প্রধান হাতিয়ার।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button