নতুন বই ও নতুন শিক্ষাক্রম

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কারণে এবার নতুন বছরের প্রথম দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ভাবে উৎসব করে বই বিতরণ করা হলো। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর মিরপুরে ন্যাশনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হলো। অন্যদিকে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে দেশের বিদ্যালয়েগুলোতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই বিতরণ করা হয়। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এনসিটিবি সূত্র বলছে, প্রাথমিকের সব বই ছাপা হলেও মাধ্যমিকের সব বই ছাপা হয় নি। অষ্টম ও নবম শ্রেনীর মোট ১০ কোটির কিছু বেশি বইয়ের মধ্যে প্রায় আড়াই কোটি বই গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত অর্থাৎ বছর শেষের দিন পর্যন্ত ছাপা শেষ হয়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যার অধ্যাপক মোঃ ফরহাদুল ইসলাম বলছেন, অষ্টম ও নবম শ্রেনীর একাধিক বিষয়ের পা-ুলিপি চূড়ান্ত হতে ডিসেম্বর মাঝামাঝি লেগে গেছে। তাই আড়াই কোটি বই ছাপাতে একটু সময় লাগছে। তবে এ দু’ শ্রেণীর অন্যান্য বই ছাপা হয়ে গেছে। আর প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত শত ভাগ বই ছাপার কাজ শেষ এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থী বই পাঁচ্ছে। এবার সারা দেশে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার বই বিনা মূল্যে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকে বই ন’ কোটি ৩৮ লাখের বেশি এবং মাধ্যমিক স্তরের বই ২১ কোটি ৩২ লাখের বেশি। এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলছেন, বছরের প্রথম দিনেই সব শিক্ষার্থী বই পাঁচ্ছে অষ্টম ও নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা প্রথম দিন ছ’ থেকে আটটি করে বই পাঁচ্ছে এই দু’ শ্রেণীর অবশিষ্ট বই সর্বোচ্চ ১০ জানুয়ারি মধ্যেই শিক্ষার্থীরা পেয়ে যাবে। করোনাকাল ছাড়া ২০১০ সাল থেকে শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে উৎসব করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দিচ্ছে সরকার। যা এখন প্রথা হিসাবে স্বীকৃত। সে মোতাবেক বছরের প্রথম দিন বই উৎসব পালিত হয়। নতুন বছর ২০২৪ থেকে দ্বিতীয়; তৃতীয়; অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে নতুন পাঠ্যক্রম শুরু হচ্ছে। বিগত বছরের শুরুতে প্রথম, ষষ্ঠ, সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর চতুর্থ পঞ্চম ও দশম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর মধ্যে দিয়ে মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শ্রেণীতে চালু হবে। এরপর ২০২৬ সালে একাদশ ও ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণীতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দিত। তারা বছরের প্রথম থেকেই লেখা পড়ার প্রতি মনোনিবেশ করবে বলে মত প্রকাশ করেছে। তবে সব বই না পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট শ্রেনির শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। তবে গত বছর কিছু শ্রেণীতে এবং চলতি বছর কিছু শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবার ফলে বছরের প্রথম দিকে শিক্ষার্থীরা সব বই না পেলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। তাই যত দ্রুত সম্ভব বই ছাপার কাজ শেষ করে তা শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। এবং আগামী বছরেও যাতে সময় মতো সব বই সব শিক্ষার্থীরা পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।