শীতার্ত মানুষের পাশে দাড়ানো এখন সময়ের দাবি

দেশে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। তাপমাত্রা কমছে। চারদিকে কুয়াশায় অন্ধকার। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্য প্রবাহ চলছে। ৩ জানুয়ারি সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। দিনে কুয়াশা কমে রোদের দেখা গেলেও সন্ধ্যার পর শীত আরও বাড়তে পারে। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ জুড়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ শুরুর পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দেশের অধিকাংশ এলাকার তাপমাত্রা কমে ও কুয়াশা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি হিমেল বাতাস বইতে শুরু করেছে। ফলে তীব্র শীতের অনুভুতিতে মানুষের কষ্ট বেড়েছে। এতে শ্রমজীবী মানুষ খুব কষ্ট পাচ্ছে। সেই সাথে সড়ক, নৌ ও বিমান চলাচলে বিঘœ ঘটছে। কুয়াশার কারণে রাস্তা ঠিক ভাবে দেখতে না পাওয়ায় দূর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। গত দু’ জানুয়ারি ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরন করতে না পেরে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ৫ টি উড়োজাহাজ অবতরন করেছে। দু’ টি জাহাজ পার্র্কিংয়ের সময় একটি সাথে অন্যটির পাখায় ধাক্কা লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সড়ক পথে তেমন দূর্ঘনটার খবর জানা না গেলেও সড়ক যোগাযোগ বিঘœ হচ্ছে কুয়াশার কারণে বলে জানা গেছে। শীত কালে জানুয়ারি মাস শীতলতম মাস। এ মাসে তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে। এ ছাড়া প্রতি বছর শীতের সময় শীত নিবারনের জন্য আগুন পোহাতে গিয়ে অনেকেই আগুনে পড়ে আহত হন। সেই সাথে শীতের সময় শিশু ও বয়স্কদের মাঝে ডায়রিয়া ও শ^াসকষ্ট জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ইতোমধ্যে উত্তরাঞ্চলে হাসপাতালগুলোয় এসব রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে মানুষ শীত নিবারনের জন্য শীত বস্ত্র কেনার প্রতি যতœশীল হতে চাইলও বাজারে নিত্যপণ্যের দাম উবর্ধগতি থাকায় তারা নিত্যদিন খাবার কিনতে না পারার কারণে শীত বস্ত্র কিনতে পারছেন না। তবে আশার কথা প্রতিবছরের মতো এবারও ব্যক্তি ও সাংগঠন ভিত্তিক কিছু উদ্যোগ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করছে। যা পেয়ে প্রান্তিক মানুষগুলো শীত নিবারন করতে পারছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই অল্প। তাই এজন্য প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ। চলমান সময় সারা দেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারে সরগরম চারদিকে। ফলে সরকারি উদ্যোগ গ্রহনের সম্ভবনাও খুব একটা নেই। তবে সরকার মানবিক করনে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নিলে শীতার্ত মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। তাই সরকারের উচিত দ্রুততার সাথে শীতার্ত মানুষের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করে তাদের পাশে দাড়াতে হবে এবং স্বচ্ছতার সাথে শীতার্ত মানুষকে শীত বস্ত্র দিতে হবে। সেই সাথে সারা দেশের মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে নিজেদের সুরক্ষা নিজেদেরই করতে হবে। কারণ প্রকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সচেতনতা ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।