নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিন

উপজেলা নির্বাচন
চার ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রতিটি ধাপেই ভোটের দিন পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে-এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। তারা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে, প্রথম ধাপে ৭৮টি, দ্বিতীয় ধাপে ৭০টি ও তৃতীয় ধাপে ৪০টি উপজেলায় নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া আরেকটি সংস্থা শুধু প্রথম ধাপে ৪৯টি উপজেলায় নির্বাচনের দিন পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে ইসিকে আভাস দিয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে ইসিকে পরামর্শ দিয়েছে এ দুটি গোয়েন্দা সংস্থা। উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের ‘হস্তক্ষেপ’ রোধে কঠোর বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি দলীয় প্রার্থী না দেওয়া, দলীয় প্রতীক না রাখা এবং দলের মধ্যে কোনো ধরনের মতবিরোধ না রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া এ নির্বাচনে কেউ অবৈধ হস্তক্ষেপ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেছেন, নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিয়োজিত প্রশাসন শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে। শান্তি বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এবারই প্রথম পুরোপুরি অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরগুলোতে শোরগোল ছিল না, আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনেরও তেমন খবর মেলেনি। এরপরও স্থানীয় এমপিদের প্রভাবমুক্ত রাখা যাচ্ছে না বলে কোনো কোনো প্রার্থী অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে নির্বাচন বর্জন করলেও প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি ও জামায়াতের প্রায় অর্ধশত প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সব মিলে ভোটের দিনগুলোয় পরিস্থিতি কী হবে, তা অনিশ্চিত। ইসি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে; কিন্তু এ প্রস্তুতিই শেষ কথা নয়। আমরা মনে করি, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশঙ্কাকে আমলে নিয়ে ইসি এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে নির্বাচনের প্রতিটি ধাপই শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হয়। মনে রাখা দরকার, ইসির জন্য এ নির্বাচনও চ্যালেঞ্জের। সব বাধা পেরিয়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে সার্বিক পদক্ষেপ নিতে হবে।