সম্পাদকীয়

প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করে আছে নদী বন্দর! ব্যবস্থা নিন

ক্ষমতার অপব্যবহার করে কিছু অসাধু চক্র দখল করে আছে নদীর সীমানা। তারা নদীর পাশ ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেন। যার ফলে যথাক্রমে নদীর মৃত্যু হতে থাকে এছাড়াও নদীতে চলা নৌযান প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। অভিযোগ উঠেছে এমনি পরিস্থিতিতে রয়েছে ভৈরব নদের কিছু অংশ। যশোরের শিল্প, বাণিজ্য ও বন্দরনগরী নওয়াপাড়ার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব নদ। খুব কাছাকাছি থাকা স্থল ও রেলপথের সঙ্গে ভৈরব নদ যোগ হওয়ায় দেশের অন্যতম বড় বাণিজ্য মোকাম নওয়াপাড়া। কিন্তু যে নদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এত বড় মোকাম, সেই ভৈরব কিন্তু ধুঁকছে। দখল ও পলি ভরাটের কারণে শীর্ণ আকার ধারণ করছে ভৈরব। বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ভৈরবের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নওয়াপাড়া নদীবন্দরের অভয়নগরের ভাটপাড়া থেকে মহাকাল শ্মশানঘাট পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা। ঐ এলাকায় নদের তীর জুড়ে গড়ে উঠেছে কয়েক শ ঘাট ও গোডাউন। এই এলাকায় সব সময় চলে নদ দখলের প্রতিযোগিতা। জাহাজ থেকে পণ্য নামানোর জন্য মটি, বালু, ইট ও সিমেন্ট দিয়ে গড়ে উঠেছে জেটিসহ শত শত কাঁচা, পাকা, আধা পাকা অবৈধ স্থাপনা। এদের মধ্যে আঞ্চলিক কর কমিশনারের ভাড়া করা কার্যালয়, নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার সীমানাপ্রাচীর, একটি অটো রাইসমিলসহ কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর গুদাম রয়েছে। নদের গভীরতা না থাকায় পণ্যবাহী কার্গো জাহাজগুলো ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। প্রায়ই সেগুলো ডুবে যায়। সূত্রমতে, গত এক বছরে ভৈরব নদে আট বার জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য নদে নির্মিত জেটি এবং অবৈধ স্থাপনা করে নদ দখলে একদিকে ভৈরবের নব্যতা কমেছে, অন্যদিকে পলি পড়ে নদ ভরাট হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএর গত ৭ মার্চের জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে ভৈরব নদে ৩৫টি অবৈধ জেটি এবং রড, সিমেন্ট, বালু দিয়ে নির্মিত একটি গাইড ওয়াল রয়েছে। নওয়াপাড়া নদীবন্দর কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর নদের দুপাশের অবৈধ জেটিসহ স্থাপনা উচ্ছেদ করার পরপরই ফের তা নির্মাণ করা হয়। এখন প্রশ্ন হলো বার বার উচ্ছেদ করার পরেও যারা ফের তৈরি করছে স্থাপনা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ভাবে কঠোর হচ্ছে না কেনো প্রশাসন? নদী দেশের সৌন্দর্য এছাড়াও নদীর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা অধিক। নদীকে সজীব পরিবেশে রাখাটা রাষ্ট্রের কর্তব্য। তাই সরকারকে ওই বিষয়ে কঠোর হতে হবে। যারা নদী বন্দরে এমন অবৈধভাবে দখল করে আছে তাদের আইনের আওতায় আনুন বিনিময়ে নদীর সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনুন। দেশ ও জাতির স¦ার্থে সরকারের কাছে আমাদের এটাই প্রত্যাশা। আশা করি খুব দ্রুত সরকার ওই বিষয়ে উদ্যোগী হবেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button