এআই প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা”হলো কম্পিউটার সিস্টেমের একটি আপগ্রেডেড সংস্করণ। এটি সাধারণত মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন হয় এমন কাজগুলি সম্পাদন করতে পারে। এসব কাজের মধ্যে যেমন রয়েছে ইনপুট করা তথ্য উপলব্ধি বা বিশ্লেষণ, তেমনি রয়েছে এসকল বিশ্লেষণ থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা। এক কথায়, মানুষ প্রতিনিয়ত যে-সব কাজ করে থাকে তার অধিকাংশই ধীরে ধীরে এআই আয়ত্ত করে নিচ্ছে। মানুষের চিন্তা ভাবনাকে কম্পিউটারের মধ্যে দিয়ে অসম্পূর্ণ তথ্য ব্যবহার করে পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত পৌঁছানো, জটিল সমস্যার সমাধান, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং গবেষণার কাজে ব্যবহার হয়। বাংলাদেশে এআই দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ও ব্যবসায় কাজে লাগছে। ২০২৪ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৭০% মানুষ নতুন কিছু শেখা, বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করতে চায়। তবে ৩৫% মানুষ মনে করে এআই তাদের জন্য ভালো হবে, আর ২৫% মনে করে এটি খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের বড়ো কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৯০% মনে করছে এআই ব্যাবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এটি কাজের গতি বাড়াচ্ছে, তবুও তথ্যের গোপনীয়তা ও সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট কিংবা স্মার্টফোন এখন সবার হাতে। প্রতিটি ঘরে ঘরে এবং প্রায় প্রতিটি মানুষের জীবনেই প্রযুক্তি এখন অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘরে বসেই কেনাকাটা থেকে শুরু করে গাড়ির টিকিট বুকিং করা যায়। সশরীরে না গিয়েও আমরা ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারি, ব্যবসায়ীরাও ঘরে বসে পুরো ব্যাবসা পরিচালনা করছেন। এমনকি হাসপাতালে না গিয়েও অনায়াসে পাচ্ছি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। এই শতকের ত্রিশের দশকে এসে প্রযুক্তি জগতে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই যার কল্যাণে চ্যাটজিপিটি, জেমিনির মতো উন্নতমানের চ্যাটবট সাধারণ মানুষের নাগালে চলে এসেছে। ‘ডিউক ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ইনোভেশন’-এর গবেষক জিউন-টাইং ইয়েহ বলেন, দীর্ঘ সময় এআই ব্যবহারে মনোযোগ ও চিন্তার ধরনে পরিবর্তন আসে এবং কগনিটিভ ডেট তৈরি হয়- অর্থাৎ মস্তিষ্ক নতুন তথ্য ধারণ ও বিশ্লেষণে দুর্বল হয়ে পড়ে। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, চ্যাটজিপিটির সঙ্গে বেশি কথা বললে একাকিত্বের অনুভূতিও বাড়ে। অতএব এআই প্রযুক্তির সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে সচেতন হওয়া সবার জন্য অত্যন্ত জরুরি। অন্ধভাবে নির্ভরশীল না হয়ে, এর ব্যবহার হতে হবে সচেতন, সীমিত ও প্রয়োজনমাফিক। প্রযুক্তি যেন আমাদের সহায়ক শক্তি হয়, নিয়ন্ত্রণকারী নয়- এ বিষয়টি মাথায় রাখা আবশ্যক।
