চালনা কলেজের অপসারিত অধ্যক্ষ অচিন্ত্য অবৈধভাবে ফের অধ্যক্ষের চেয়ারে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং এডহক কমিটির নির্দেশ উপেক্ষিত
দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং এডহক কমিটির নির্দেশ উপেক্ষিত। চালনা কলেজের অপসারিত অধ্যক্ষ অচিন্ত্য কুমার মন্ডল অবৈধভাবে ফের অধ্যক্ষের চেয়ার দখলে নেওয়ার অভিযোগ।
সুত্রে জানা যায়, দাকোপের চালনা কলেজের অপসারিত অধ্যক্ষ অচিন্ত্য কুমার মন্ডল একই সাথে চালনা কলেজের অধ্যক্ষ ও চালনা কেসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে থাকায় গত ১২/১৭ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নাসিমা খানম স্বাক্ষরিত জনবল কাঠামো মোতাবেক তার এমপিও কর্তন করা হয়। একই সাথে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সহকারী পরিচালক ফারহানা আক্তার (কলেজ-৩) অপর একটি স্বারকে অচিন্ত্য কুমার মন্ডলকে গ্রহনকৃত বেতন ভাতার সরকারী অংশ ১০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। অধ্যক্ষ অচিন্ত্য মন্ডল মন্ত্রনালয়ের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া গ্রহন করে নিজের অনুকুলে আদেশ আনতে ব্যর্থ হয়। গত ১৮/২৩ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত কলেজ পরিচালনায় গঠিত এডহক কমিটির সভাপতি পরিবর্তন করে খুলনা জেলা প্রশাসককে সভাপতি হিসাবে মনোনয়ন দেয়। পরবর্তীতে গত ২৩/২৩ একই কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় খুলনা জেলা প্রশাসকের স্থলে কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি হিসাবে দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) স্বাক্ষরিত গত ২০/২৩ পৃথক স্বারকে রীট পিটিশন নং ১৪৭৬৩/২০১৭ এর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ অচিন্ত্য মন্ডলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের লক্ষ্যে উপাধ্যক্ষ/জ্যেষ্ঠতম ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করে অচিন্ত্য মন্ডলের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সভাপতিকে অনুরোধ করেন। এ প্রেক্ষিতে গত ১৭ আগষ্ট কলেজ পরিচালনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অচিন্ত্য কুমার মন্ডলকে অপসারন করে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সেই থেকে তিনি চালনা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু অপসারনের ৪ মাস ১৮ দিন পর গত ৯ নভেম্বর ২৩ অচিন্ত্য কুমার মন্ডল অবৈধভাবে ফের অধ্যক্ষের চেয়ার দখলে নিয়ে যথারীতি দায়িত্ব পালন করেছেন মর্মে অভিযোগ উঠেছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ রায়ের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া মতামত পত্রের আলোকে তিনি (অচিন্ত্য কুমার মন্ডল) দায়িত্ব গ্রহন করেছেন।
অধ্যক্ষ অচিন্ত্য কুমার মন্ডল তার অপসারন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে অবৈধ দাবী করে বলেন,আমি মহাপরিচালকের অধীনে চাকুরী করি, তিনি মতামত দিয়েছেন আমি যথারীতি দায়িত্ব পালন করতে পারবো। এ ব্যাপারে এডহক কমিটির সভাপতি ও দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তী বলেন,আমি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ডেকে অচিন্ত্য মন্ডল দাপ্তরিক স্বাক্ষর করছেন কিনা সেটি নিশ্চিত হতে সংশ্লিষ্ট খাতাপত্র দেখানোর জন্য বলেছি। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, অচিন্ত্য কুমার মন্ডল অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত নন। এ ছাড়া তদন্তে তার বিরুদ্ধে নানা দূর্ণীতি অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় দঃ বিঃ ৪০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দূর্নীতি দমন কমিশন খুলনা জেলা কার্যালয় গত ০৮/২০২১ মামলা দায়ের করে মামলা নং ১০।