বিদেশি কুলচাষে সফল পাইকগাছার কুল ব্যবসায়ী

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার পাইকগাছায় গদাইপুন ইউনিয়নে রজনীগন্ধা নার্সারির মালিক সুকনাথ পাল বাণিজ্যিক ভাবে কুল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। উপজেলার বাঁকা গ্রামে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ৩ শতাধিক বল সুন্দরী, থাই আপেল ও কাশ্মীরি কুল গাছের বাগান তৈরি করেছেন। বাগানে সারি সারি কুলগাছ। আকারে ছোট। গাছগুলো একটি থেকে আর একটির দূরত্ব চার থেকে পাঁচ ফুট। কুলের ভারে ন্যুয়ে পড়েছে গাছগুলো। বাঁশ দিয়ে ঠেঁস দিয়ে রাখা হয়েছে। গাছগুলো লম্বা ৫ থেকে ৬ হাত। থোকায় থোকায় ঝুলছে শুধু বল সুন্দরী কুল। থাই আপেল কুলের ওপরের অংশে হালকা সিঁদুর রং রয়েছে। ফলটি আকারে বড়। দেখতে ঠিক আপেলের মতো। খেতেও ঠিক আপেলের মতো সুস্বাদু। এদিকে এই ফলটি খেতে সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় পর্যায়সহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বেশ পরিচিতি লাভ করায় ক্রেতাদের চাহিদাও দিন দিন বেড়েছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১০/১২টি কুলের বাগান, ক্ষেতের আইলে, বাড়িতে, ছড়ানো ঠিটানো প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে কুল বাগান রয়েছে। সুকনাথ পাল আড়াই বছর আগে উপজেলার বাঁকা গ্রামে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ৩ শতাধিক বল সুন্দরী, থাই আপেল ও কাশ্মীরি কুলের গাছের চারা লাগান। বিদেশী জাতের কুল গাছের চারা রোপণ ও অনন্যা খরচসহ তার দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়। চারা রোপণ করার ৭ মাসের মাথায় গাছে ফল ধরে। প্রথমে বাগান থেকে এক লাখ দশ হাজার টাকার কুল বিক্রি হয়। দ্বিতীয় বছরে কুলের দাম বেশি পাওয়ায় প্রায় ৩ লাখ টাকার কুল বিক্রি হয়। এ বছর অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া গাছে ফল কম হয়েছে। আর দামও কম। প্রতি কেজি ৫০ টাকা কেজি দরে কুল বিক্রি হচ্ছে। গাছ প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১৫ কেজি করে বল সুন্দরী, থাই আপেল কুল ধরেছে। ইতোমধ্যে বাগান থেকে কুল বিক্রি শুরু হয়েছে। শ্রমিকরা বাগানে কুল তোলা ও বাজারজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকার মতো ফল বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানান। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এই বাগান থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি কুল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সরেজমিনে দেখা যায়, সবুজ পাতার ফাঁকে লুকিয়ে রয়েছে বল সুন্দরী ও থাই আপেল কুল। যে দিকে দৃষ্টি যায় শুধু কুল আর কুল। বাহারী রঙের দৃষ্টিনন্দন কুল দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অসিম কুমার দাশ বলেন, উপজেলায় কিছুকিছু নার্সারিতে বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন। এরমধ্যে সুকনাথ পাল একজন সফল কৃষক। নতুন জাতের এই কুলের চাষ করে তিনি এলাকায় চমক সৃষ্টি করেছেন।