স্থানীয় সংবাদ

জমি দখল অর্থ আত্মসাৎ সহ নানা অভিযোগ ইউনুস শিকদারের বিরুদ্ধে

রূপসায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার : খুলনার রূপসা উপজেলার আলাইপুর গ্রামে জনবসতি পূর্ণ এলাকায় অনুমোদনহীন ইটভাটা নির্মাণ, বন্দোবস্ত ছাড়াই সরকারি রাস্তা ভোগ দখল ও পাওনা টাকা পরিশোধ না করে জোরপূর্বক ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখল করে ইট ভাটা ব্যবসা পরিচালনা করার প্রতিবাদে ইউনুস শিকদারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা। পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের সাথে নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারী সকালে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী আকতার শিকদার। এসময় তিনি লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে বলেন, অবৈধ অর্থ ও পেশীশক্তি দ্বারা দুর্বল মানুষেরা সবসময় নিষ্পেষিত। তেমনি একটি ঘটনা ঘটে চলেছে খুলনার রূপসা উপজেলার আলাইপুর গ্রামে। ইউনুস শিকদার নামে ঘাটভোগ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক বিএনপি নেতা এমন কর্মকন্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সম্পর্কে আমার আপন চাচা হলেও তার ও তার পরিবারের সদস্যদেও দ্বারা আমি হামলা, মামলা ও জীবন নাশের হুমকির শিকার হয়ে আসছি। যা এলাকার মানুষ অবগত আছেন।
সরলতার সুযোগ নিয়ে ইউনুস শিকদার নিজের জমির পাশাপাশি আমার পরিবার ও অন্য চাচার জমি দখলে নিয়ে ২০১৭ ওই ভাটা নির্মাণ করেন। এরমধ্যে আমার পিতা ইউসুফ শিকদার ও চাচা তৈয়ব শিকদারের ২ একর করে সমপরিমাণ জায়গা রয়েছে। বিনিময়ে মাসে আমাদের ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ অবধি আমরা কোন টাকা বুঝে পায়নি। বারবার তার কাছে বলার পর ও বিষয়টি নিয়ে তিনি কোন প্রকার কর্ণপাত করেননি। আমার অপর চাচা তৈয়ব শিকদার ও আমার পিতা ইউসুফ শিকদারের জমি দখল করার প্রতিবাদ করায় আমার নামে ৮টি মামলা দেন ইউনুস শিকদার। যা এখনও বিচারাধীন। আমি এলাকার ইটভাটাতে মাটি সরবরাহের ব্যবসা করে থাকি। সে কারণে মৌখিক একটি চুক্তিতে ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইউনুস শিকদারের ইট ভাটায় মাটি সরবরাহ করি। মাটি সরবরাহের কিছু টাকা পেলেও এখনও ৩৮ লাখ টাকা তার কাছে পাওনা রয়েছে। সেই টাকার জন্য বার বার বলার পর ও পরিশোধ না করে সে এবং তার ছেলের গুন্ডা বাহিনী দিয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত জীবন নাশ ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইটভাটা নির্মাণের নেপথ্যে খুঁজতে গিয়ে জানতে পারি এর পরিবেশের ছাড়পত্র এবং জেলা প্রসাশনের কোন অনুমোদন এবং আনুসাঙ্গিক কাগজ পত্র নাই। আঠারোবেকি নদীর চরের বিশাল জায়গা তিনি কোন রকম বন্দোবন্ত ছাড়াই ভোগ দখল করছেন। গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার ইট বিছানো রাস্তাও দখল করে নিয়ে ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা নির্মাণ আইনত নিষিদ্ধ হলেও ইউনুস শিকদার আইনের তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের নাকের ডগায় এ কার্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে আমাদের গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন গ্রামের মানুষ। গত ৫ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযান পরিচালিত হয় “ইভিএম” ইট ভাটায়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ওই ভাটায় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ৭ দিনের মধ্যে কাগজপত্র দেখাতে বলা হলেও গত ১৫ দিনে এর কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রসাশক বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনুস শিকদারের মত এক পেশী শক্তির মানুষের ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত করে পরিবেশ নষ্টকারী অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে এলাকাবাসীর মাঝে পরিচ্ছন্ন ও সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button