স্থানীয় সংবাদ

খুলনার বই মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হলেও মেলার সময় বাড়লো একদিন

পৌনে পাঁচ কোটি টাকার বই বিক্রি

স্টাফ রিপোর্টারঃ বৃহস্পতিবার বিকেলে মূল মঞ্চে মাস ব্যাপী খুলনার বই মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠান হলেও মেলা শেষ হচ্ছে না। অনানুষ্ঠানিকভাবে মেলার সময় আরো একদিন বাড়িয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। তবে মেলা কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার, খুলনার উপ-পরিচালক এবং একুশে বইমেলা, খুলনা-২০২৪ এর সদস্য সচিব মোহাম্মদ হামিদুর রহমান বলেন, মেলা বাড়ানোর জন্য স্টল কমিটি অনেক অনুরোধ করেছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করেছেণ। সে মতে, অঘোষিতভাবে মেলার সময় আরো একদিন বাড়ানো হয়েছে। আজ শুক্রবার রাতে শেষ হবে এই মেলা। তবে মেলার সময় বাড়লেও মেলার মূল মঞ্চ থাকবে না। শুধু স্টল থাকবে বলে তিনি জানান। মেলা শেষ হবে এমনই খবরে বৃহস্পতিবার বিকেলে মেলায় দর্শনাথীদের ভীড় উপচে পড়ে। বিক্রেতারা শেষ মূহুর্তে বেশী ছাড় মূল্যে বই বিক্রি করায় ক্রেতারা সে সুযোগটা হাত ছাড়া করছেন না। বাক আবৃত্তি অনুশীলন চক্রস্টলের প্রতিনিধি সুলতান মাহমুদ শ্রাবন বলেন, শেষের দিকে মেলা জমে উঠেছে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার বিক্রি কম হয়েছে। এদিকে খুলনায় মাসব্যাপী একুশে বইমেলার একশত ১০টি স্টলে চার কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে মেলা আয়োজক কমিটি। বিগত বই মেলায় সাড়ে তিন কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিলো। মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ বৃহস্পতিবার বিকালে বয়রাস্থ বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার দপ্তরের পরিচালক মোঃ তবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিচালক বলেন, জ্ঞান অর্জন করতে হলে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। মন দিয়ে বই পড়লে জ্ঞানী হওয়া যায়, বই আমাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে। যে বই পড়ে তার কোন শত্রু থাকতে পারে না। ভালো মানুষ হতে চাইলে, দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে চাইলে, নিজেকে সঠিক কাজে নেতৃত্ব দিতে চাইলে ও প্রগতিশীল হতে চাইলে ভালো লেখকের বই পড়তে হবে। বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে বলেই এবছর মেলায় বেশি বই বিক্রি হয়েছে। তিনি নতুন প্রজন্মকে বেশি করে বই পড়ায় উৎসাহ দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান। খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোঃ ইউসুপ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়বেদ চৌধুরী, কেএমপি’র এডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মীর আলিফ রেজা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলমগীর কবির ও সরদার মাহাবুবার রহমান। স্বাগত বক্তৃতা করেন বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের উপপরিচালক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান। খুলনা পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মোঃ আলমগীর শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন। বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহযোগিতায় খুলনা জেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শ্রেষ্ঠ স্টল ক্যাটাগরিতে পাঁচটি স্টল প্রতিনিধিদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। মাসব্যাপী বইমেলায় নতুন ৩৪টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বুক পয়েন্ট স্টলের প্রতিনিধি আল আমিন জানান, মেলার সময় শুক্রবার মাত্র একদিন বাড়ানোর কারণে কর্তৃপক্ষকে তিনি ধন্যবাদ জানান। আসফিয়া বুক ডিপো স্টলের প্রতিনিধি কেএম তুহিন বাবু বলেন, শেষ দিকে মেলায় দর্শক সমাগম প্রচুর হয়েছে। বেচাবিক্রি অনেক ভাল। তিনি বলেন, ঢাকায় যেহেতু মেলার সময় দু’দিন বাড়িয়েছে সেহেতু খুলনার মেলার সময় এক দিন কর্তৃপক্ষ বাড়িয়েছে। তবে তা অঘোষিতভাবে বেড়েছে বলে তিনি জানান। তিনি জানান, সবচেয়ে বেশী বই বিক্রি করে তিনি স্টল মালিকদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশ ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মোঃ আলমগীর জানান, যেহেতু পবিত্র শবে বরাত ও বৃষ্টির কারণে মোট দু’দিন তাদের বেচাবিক্রি খুবই কম হয়েছে। এতে স্টল মালিকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেহেতু ক্ষতি পুশিয়ে নেয়ার জন্য মেলার সময় আরো একদিন বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না দেয়ার শর্তে এ মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান। বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন,“আমাদের ছেলেরা বইয়ের স্টল দিয়ে মেলাকে জমিয়ে রেখেছে। তাদের দাবি দু’দিন মেলার সময় বাড়ানো- বিষয়টি যেন জেলা প্রশাসক শোনেন সে জন্য তিনিও সুপারিশ করেছেন। তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে জেলা প্রশাসক মেলার সময় এক দিন বাড়িয়েছে বেল তিনি জানান।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button