শেষ মুহুর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত নগরবাসী

শপিংমল, বিপনীবিতান ও ফুতপাতের দোকান গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় #
# গত বছরের তুলনায় পোশাকের দাম বাড়তির অভিযোগ ক্রেতাদের
মো. আশিকুর রহমান ঃ “ ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশি ঈদ, তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ”- দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আকাশে বাঁকা চাঁদের হাসিতে মুসলিম উম্মেহার সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। পরিবারের সকলে মিলে মিশে নতুন পোশাকে ঈদের বাড়তি আনন্দটুকু ভাগাভাগি করে নিতে তাই শেষ মুহুর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত এখন নগরী খুলনার প্রাণকেন্দ্রে গড়ে ওঠা সব আধুনিক বিপনীবিতান, শপিংমল, মার্কেটসহ ফুতপাতের ভ্রাম্যমান দোকানগুলোতে অসহনীয় গরম উপেক্ষা করে এখন চলছে কেনাকাটা মহোৎসব। বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ মাত্র এক দিন বাকি, তাই শেষ সময়ে কেনাকাটার জন্য সকাল হতে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত ক্রেতা সমাগমে মুখরিত। কেনাবেচা সন্তুষ্টি হওয়াতে বিক্রেতারা বেশ খুশি। শেষ সময়ে খুলনার বিপনীবিতান, শপিংমল, মার্কেট গুলোতে শিশু, নারী-পুরুষ, তরুন-তরুনী, আবাদ-বৃদ্ধা সহসব বয়সী মানুষেরা কেউ বাচ্চাদের পোশাক, কেউ শাড়ী বা থ্রী-পিস, কেউবা আবার প্যান্ট, শার্ট, তরুনেরা পাঞ্জাবি, তরুনীরা সিল্ক বা জামাদানি শাড়ি কিনতে ব্যস্ত ছিল। তবে ক্রেতা বিগত বছরের তুলনায় এবছর পোশাকের দাম বাড়তির অভিযোগ জানিয়েছেন। দোকানিরা জানান, এবারের ঈদে পাকিস্তানি ও ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের থ্রিপিস বেশি বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি থ্রিপিস সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, ভারতীয় ব্র্যান্ড ৪ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং ভারতীয় বুটিকসের পোশাক ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানি আগানূর থ্রিপিস, সাদাবাহার, মারিয়াবী ও ভারতের আলিয়া কাট, নায়রা কুর্তি ইত্যাদি। সোমবার (৮ এপ্রিল) সকালে ও সন্ধ্যার পর নগরীর নিউ মার্কেট, জলিল টাওয়ার, সেইফ এন্ড সেইভ, স্বপ্নীল, ইয়োলো, জলিল টাওয়ার, খুলনা শপিং কমপ্লেক্স, বড় বাজার, রব সুপার মার্কেট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপনী বিতান, মশিউর রহমান মার্কেট, দরবেশ চেম্বার, এশা চেম্বার, আকতার চেম্বার, রেলওয়ে মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপনী বিতান, খালিশপুর সুপার মার্কেট, দৌলতপুর বাজারের আশা বস্ত্রালয়, আদিব বস্ত্রালয়, জাবিরা ফ্যাশন, সাতরং, মাইশা ফ্যাশন, এস.আর বস্ত্রবিতান, ড্রেস কোড, শ্যামা বস্ত্রালয়, প্রবীর ক্লথ স্টোর, চৌধুরী এন্টার প্রাইজ, হাসনাত এন্টার প্রাইজ, মাতৃবন্ত্রালয়, সাইম নিউ কালেকশন, আঁচল ফ্যাশন, জে.কে শপিংমল, অমি শপিংমল, স¤্রাট সু, মুকুট স¤্রাট সুট, টাওয়ার স¤্রাট সু, সংসার সু বাজার, বাটা সু, পায়ে পায়ে, লিবার্টি বাজার, লির্বাটি সু, ওয়েলকাম সু, শুভেচ্ছা কসমেটিক্স, সাবিনা, আরিশা কসমেটিক্সসহ ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি নিউ মার্কেট, বৈশাখি সুপার মার্কেটসহ স্থানীয় এলাকার বিপনীবিতান, শপিংমল গুলোতে ঈদের শেষ সময়ের কেনাকাটায় নজরকাড়া ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। খুলনার বিভিন্ন বিপনীবিতান, শপিংমল, মার্কেট সমূহ দৃষ্টিনর্ন্দন ভাবে সাজানো হয়েছে ক্রেতাদের জন্য আধুনিক ডিজাইন ও বাহরি রঙের পোশাক, জুতা-সেন্ডেল, নামি দামি কোম্পানীর প্রসাধনী, ব্যাগ, ব্যাল্টসহ ঘড়ি ও চশমা। ঈদ যত নিকটে আসছে, প্রতিদিনই ততই ক্রেতা বাড়ছে ঈদ বাজারে। বিরতিহীন কেনাকাটা চলছে সকাল হতে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত। ওয়েলকাম সু-এর সত্ত্বাধীকারি শরীফ মোড়ল জানান, আমাদের শো-রুমে প্রতি বছরই ভালো কেনাবেচা হয়। ঈদের আগেই সকল বয়সীদের জন্য বাহারি রঙ ও ডিজাইনের জুতা সরবরাহ করা হয়ে থাকে। মহিলাদের জন্য সু-সেন্ডেল, পেন্সিল সু, নাগড়া, চায়না সেন্ডেল, পুরুষদের দুই ফিতার সেন্ডেল, সাইকেল সু, লুফার ও বাচ্চাদের লেদার জুতা, চায়না জুতা, লুফার, কেসসহ বাহরি ডিজাইনের জুতা সেন্ডেল বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদের শেষ মুহুর্তে কেনাকাটা করতে ক্রেতাদের যথেষ্ট সমাগম ঘটছে। বেচাকেনায় ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্টু। নগরীর আশাবস্ত্রের মালিক জানান, ঈদকে ঘিরে তরুনীদের বেশি ঝোঁক থাকে শাড়ির প্রতি। যে কারণে বাহারি ডিজাইন ও রঙের গ্যাস সিল্ক, বেনারসি, জামদানি, ঝুট জামদানি, কারচুপি, কাতান, কাঞ্জীবরন, মাচরাইচ কটন প্রভৃডু শাড়ি বিক্রি করছি। শেষ সময়ের ঈদ বাজারে ক্রেতা সাড়া বেশ ভালো। পোশাক বিক্রেতা ইকবাল হোসেন ডলার জানান, ঈদ উপলক্ষ্য ছেলেরা বেশি পাঞ্জাবি ও কাবলি কিনছে। তবে যেহেতু বর্তমানে বেশ গরম তাই, টি-শার্ট, কটনের পাঞ্জাবী, জিন্স প্যান্ট ও বিক্রি হচ্ছে যথেষ্ট। প্রসাধনী বিক্রেতা ইলিয়াজ জানান, আমার দোকানে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন ব্যান্ডের প্রসাধনী তুলেছে ঈদ উপলক্ষ্য । তাছাড়াও মেহেদী, আয়লারান, ফ্রেশ ওয়াজ, বিভিন্ন ডিজাইনের চুড়ি, গলার হার, কানের দুল, চুলে থোপা, লিপস্টিকসহ অন্যান্য প্রসাধনীর বিক্রি করছি। দিনজুড়ে কেনাবেচার চাপ বেড়েছে। বয়রা বাস্তহারা কোলনী হতে আসা ক্রেতা রাজিব জানান, স্ব-পরিবারে খুলনা ডাকবাংলা মার্কেটে কেনাকাটা করার জন্য এসেছি। হাতে আর সময় কোথায়, একদিন পরেই ঈদ। বাজারে যে পরিমানে ভীড়, মাথায় নষ্ট। বর্তমানে যে গরম, তারপর আবার বাজারে পা-ফেলার মতো জায়গা পর্যন্ত নেই। যতই কষ্ট হোক একদিনই সকলের কেনাকাটা করে যাবো। খালিশপুর আলমডাঙ্গা এলাকা হতে আসা ক্রেতা টুম্পা জানান, দেখতে দেখতে ঈদ চলে এলো। হাতে আর সময় কই? তাই স্বামী- সন্তান, শ^শুড়-শাশুড়ী, বাবা-মা, ভাই বোনদের জন্য কেনাকাটা করতে এলাম। ক্যাপশন ঃ খুলনায় শেষ মুহুর্তের কেনাবেচায় বিপনীগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় ……প্রতিনিধি।