অভয়নগরে ইজিবাইক চালক ইমনের ভৈরব নদে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি ঃ অভয়নগরে ইজিবাইক চালক নিখোঁজ ইমনের ভৈরব নদীতে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহটি মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় বসুন্দিয়ার সদুল্লাপুরে নাথপাড়া মন্দির সংলগ্ন ভৈরব নদীতে (কাটা খালে) বস্তাবন্ধি লাশের সন্ধান মিলেছে। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পরে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা ও অভয়নগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। তবে পুলিশ ঘটনার রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি। মঙ্গলবার আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১ টায় পুলিশ অজ্ঞাত অবস্থায় লাশ উদ্ধারের পর পরিচয় শনাক্ত করেছে পিবিআই যশোর। নিহতের প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ইমনকে হত্যার পর তার কাছে থাকা ইজিবাইক ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তিতে ঘাতকরা ইমনের লাশ বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলে চলে যায় । বাইক চালক ইমন আহম্মেদ (১৯) অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পুড়াটাল গ্রামের আবু কালামের ছোট ছেলে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে নয়টায় নদীর পাড় থেকে প্রচন্ড দূর্গন্ধ বের হতে থাকে। পরবর্তীতে তারা একটি বস্তায় ভরা লাশ সাদৃশ্য ভেসে থাকতে দেখেন। পুলিশকে খবর দিলে মুহুর্তের মধ্যে পুলিশ,পিবিআই,ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থলে আসে এবং লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তিতে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ইমনের কাছে থাকা মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। জানা গেছে, ভাড়ায় চালিত ইজিবাইক নিয়ে ইমন বাড়ি থেকে বের হয় ২৮ এপ্রিল রোববার ভোর ৬টার দিকে। এরপর বেলা গড়িয়ে দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা পার হয়। বাড়ি ফেরার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে সে বাড়িতে না ফিরলে বাবা মা সহ পরিবারের লোকজন খোজাখুজি শুরু করে। ছেলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।সে থেকে সোমবার সন্ধ্যা পযর্ন্ত খোজাখুজি করেও তার সবর্শেষ কোন সন্ধান মেলেনি। পিতার আবু কালামের ভাষ্যমতে, ইমন আহম্মেদ একই গ্রামের আব্দুস সালামের ইজিবাইক ভাড়া করে নওয়াপাড়া টু বসুন্দিয়া রোডে চালিয়ে আসছে। প্রতিদিনের ন্যায় ২৮ এপ্রিল রোববার সকালে ইজি বাইক নিয়ে বের হয়ে সন্ধ্যায় আর বাড়িতে ফেরেনি ইমন। বাইক স্ট্যান্ডে খোজ নিলে কেউ কেউ বলছে বসুন্দিয়ার দিকে ভাড়া নিয়ে যেতে পারে। তারপর থেকে সঠিক কেউ কিছু বলতে পারেনি ২ দিন যাবত। আত্মীয় বাড়ীসহ সম্ভাভ্য সকল যায়গায় খোজাখুজি করেও পাওয়া যায়নি। ইমনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যায়। নিখোঁজ সংক্রান্ত বিষয় এনে ইমনের পিতা আবু কালাম বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় ২৯ এপ্রিল সোমবারে অভিযোগ করেন। এবং এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এরপর ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা ১১ টার সময় নিখোঁজ ইজিবাইক চালক ইমনে লাশ যশোর সদর বসুন্দিয়া ইউনিয়ন সদুল্লাপুর (শাখা নদীতে বস্তা বন্দী অবস্থায় ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর মর্গে পাঠান। অভয়নগর থানার ওসি এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজ সংক্রান্ত বিষয়ে ইমনের পিতা বাদী হয়ে সোমবার অভিযোগ দায়ের করেন। আমরা অভিযোগ পেয়ে পুলিশের টিম উপজেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ইমনকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। আজ বসুন্দিয়া এলাকায় ভৈরব নদের তীরে স্থানীয়রা বস্তা বন্দী মরদেহ দেখতে পান। আমরা মরদেহ উদ্ধার করে যশোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হচ্ছে। আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত ২৮ এপ্রিল নিখোঁজ হয় ইমন। এঘটনায় অভয়নগর থানায় জিডি করা হয়। পরবর্তীতে আজ সকালে লাশ উদ্ধার হয়। ইমনের পরিবারের সদস্যরা এসে পরিচয় শনাক্ত করে। লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ইজিবাইক ছিনতাইকে কেন্দ্র করে হত্যা করা হয়েছে চালক ইমনকে। পরে লাশ বস্তাবন্দি করে ফেলে দেয়া হয়েছে নদীতে। পুলিশ এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎপর ও ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।