স্থানীয় সংবাদ

খুলনার ঈদ বাজার : পোশাকের সরবরাহ থাকলেও ক্রেতা কম

স্টাফ রিপোর্টার ঃ মাত্র এক দিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (১৭ জুন) সারাদেশের দেশের মতো খুলনায় ধর্মীয় ভাবগার্ম্ভীযের সাথে উদ্যাপিত হতে যাচ্ছে ঈদুল আযহা। আসন্ন ঈদকে ঘিরে খুলনা আধুনিক মার্কেট, শপিংমল, বিপনীবিতান গুলো বর্নীল সাজে সাজিয়েছে ব্যবসায়ীরা। পোশাকের দোকানগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে নতুন নতুন পোশাক। তবে নতুন পোশাকের যথেষ্ট সরবরাহ থাকলেও ক্রেতার দেখা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, টুকটাক কেনাবেচা হলেও এখনো জমজমাট কেনাবেচা শুরু হয়নি। ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদে কেনাবেচার যে পরিমান কেনাবেচার চাপ থাকে, কোরবানী ঈদে তেমনটি কেনাবেচার চাপ হয় না। যা কেনাবেচা হয় ঈদের ১/২ আগে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বছরে দুই ঈদ, হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহৎ উৎসব দূর্গা পূজাতে ভালো কেনাবেচা হয়ে থাকে। এছাড়া সারা বছর ধরতে গেলে ঝিঁমিয়ে ঝিঁমিয়ে সময় কাটাতে হয়। সাধারনত কোরবানী ঈদে রোজার ঈদের অর্ধেক পরিমানও কেনাবেচা হয় না। কারণ রোজার ঈদের প্রায় প্রতিটি পরিবারের লোকজন কেনাকাটা করে, যা কোরবানী ঈদে করে না। তারপরও ঈদের কাংক্ষিত কেনাবেচার উদ্দেশ্যে দিন গুনছেন। দেখা গেছে, নগরীর ডাক বাংলা সুপার মার্কেট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপনী বিতান, মশিউর রহমান মার্কেট, রব সুপার মার্কেট, বড় বাজার, আলো সুপার মার্কেট, সেফ অ্যান্ড সেভ, খুলনা শপিং কমপ্লেক্স রেলওয়ে মার্কেট, রূপসা মার্কেট, দরবেশ চেম্বার, এশা চেম্বার, আকতার চেম্বার, নিউ মার্কেট, জলিল টাওয়ারসহ বিভিন্ন আধুনিক বিপনীবিতান, দৌলতপুরের মোর্ত্তজা ম্যানশন, আশা বস্ত্রালয়, প্রবীর ক্লথ স্টোর, শিহাব ফ্যাশন, আফসানা ম্যানশন, শীতল ফ্যাশন, আচল ফ্যাশন, অমি শপিংমল, মিশন এন্ড লিখন গার্মেন্টস্, সেইফ এন্ড সেইভ, জে.কে শপিং কর্ণার, নিউ কালেকশন, ফাস্ট চয়েজ, ফারিহা ফ্যাশন, রিয়াজ সু, সালমান সু, স¤্রাট সু, ওয়েলকাম সু, মের্সাস সংসার, সংসার সু, বাটা সু, খালিশপুর চিত্রালী বাজার, সন্ধ্যা বাজার, ফুলবাড়ীগেট বাজার, শিরোমনি বাজার, বৈশাখি সুপার মার্কেট, নিউ মার্কেট, ফুলতলা শপিংমল, মার্কেট ও আধুনিক বিপণীগুলোতে দৃশ্যমান হচেছ বাহারী পোশাকের। তাছাড়া বিভিন্ন জুতা-সেন্ডেলের দোকান ও প্রসাধনীর দোকানগুলোও সেজেছে বাহারী সাজে। আশা বস্ত্রালয়ের মালিক নির্মল সাহা জানান, আসন্ন ঈদের কেনাবেচার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বসে আছি, তবে ক্রেতা সাড়া তেমন নেই। প্রতি বছরই রোজার ঈদের তুলনায় কোরবানী ঈদে কম কেনাবেচা হয়। আসন্ন ঈদের জন্য ইতিমধ্যে মোকাম হতে নতুন নতুন শাড়ি সরবরাহ করা হয়েছে, তবে নতুন পোশাকের তেমন সংযোজন নেই। ঈদ-পুজা যে কোনো উৎসবে তরুনীদের পছন্দের শীর্ষে শাড়ী। যে কারণে দোকানে গ্যাস সিল্ক, বেনারসি, জামদানী, সিল্ক, কাতান, ঝুট জামদানী সরবরাহ করা হয়েছে। তবে একটু বয়স্কদের জন্য প্রিন্ট আর টাঙ্গাইল শাড়ি বেশি চাহিদা থাকে। নগরীর জে.কে ফ্যাশনের বিক্রেতা কবির জানান, ঈদ উৎসবে তরুনদের বেশি পছন্দ পাঞ্জাবী। যার মধ্যে রয়েছে ইন্ডিয়ান ব্রাশু, গুটি ও টিস্যুৎ, চাহিদার শীর্ষে থাকে কাবলিও পাশাপাশি গের্ঞ্জি, শার্ট-প্যান্টও। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে বাচ্চাদের নতুন পোশাকের পাশাপাশি সব বয়সীদের পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। তবে তেমন ক্রেতা নেই। আশাকরি ঈদের ১/২দিন আগে কেনাবেচার চাপ বাড়বে। ওয়েলকাম সু-বাজারের মালিক শরীফ মোড়ল বলেন, কোরবানী ঈদ আসন্ন, ঈদকে ঘিরে কেনাবেচার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠানে হরেক ডিজাইনের জুতা-সেন্ডেল উঠিয়েছি সব বয়সের ক্রেতাদের জন্য। মহিলাদের এ ঈদে সু, সেন্ডেল, পেন্সিল সু, নাগড়া, চায়না সেন্ডেল। পুরুষদের দুই ফিতা সেন্ডেল, সাইকেল সু, লুফার। বাচ্চাদের চায়না, থাই, কেস, সু-সেন্ডেল সরবরাহ করা হয়েছে। তবে বর্তমানে কেনাবেচার তেমন বাড়তি চাপ নেই, মোটামুটি কেনাবেচা চলছে। টুকটাক কেনাবেচা চলছে। আশাকরি ঈদের এক দিন আগে ভালো কেনাবেচা হবে। শুভেচ্ছা কসমেটিক্স হাউজের মালিক ইলিয়াজ জানান, ঈদ উপলক্ষে চুড়ি, কাঁকড়া, আইলিনার, মাসকারা, কানের দুল, কাজল, সেট, ক্রিম, পারফিউম, শ্যাম্পু, রং ফর্সাকারী ক্রিম, ফেসওয়াশ, ফেস পাউডার, মেহেদী সহ বিভিন্ন আধুনিক সব প্রসাধনী দোকানে তুলেছি। তবে এখনো ঈদের বাজার জমে উঠে পারেনি। ঈদের আগের দিন কেনাবেচা ভালো হবে এবং ক্রেতা সাড়া মিলবে। ঈদ বাজারে আসা ক্রেতা সাবিনা আক্তার জানান, রোজার ঈদে বাচ্চাদের দু’তিন সেট করে পোশাক কিনে দিয়েছে। এবারও বাচ্চারা বায়না ধরে নতুন পোশাক কিনে দিতে হবে। তাই অল্প বাজেটের মধ্যে কেনাকাটার জন্য মার্কেটে এলাম। খালিশপুর নয়াবাটির বাসিন্দা ফাহিমা আক্তার বর্ষা জানান, রোজার ঈদে পার হতে না হতে আবার কোরবানী ঈদ চলে এলো। রোজা ঈদে পরিবারে সকলের জন্য সাধ্যে মধ্যে কেনাকাটা করেছি। এই ঈদেও বাচ্চাদের জন্য কেনাকাট করতে হবে। হাতে আর তেমন সময় নেই, একদিন পরেই ঈদ। তাই টুকিটাকি কেনাকাটা করার জন্য বাজারে এসেছি। ঈদ বাজারে আসা নাইম জানান, কোরবানী ঈদের প্রথম কাজ হচ্ছে, কোরবানী করা। আল্লাহর তালার রহমতে কোরবানী করছি। তারপর প্রতি বছরই পরিবারের সদস্যদের জন্য দুই ঈদই কেনাকাটা করতে হয়। বাচ্চাদের সাথে করে খুলনার নিউ মার্কেটে এসেছি কেনাকাটা করার জন্য। বাচ্চাদের জন্য তো ঈদ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button