খুলনায় বিষধর সাপের এন্টিভেনম মজুদ থাকলেও নেই রোগী
সরকারী হাসপাতাল
শেখ ফেরদৌস রহমান : সারাদেশে বিষধর রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে সাধারণ মানুষ। তবে যতটা না সাপে দংশনের খবর মিলছে, তার থেকে অকেগুণ বেশি প্রচারণা এবং আতংক ছড়িয়েছে। যার সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও খুলনা জেনারেল হাসপাতাল (সদর) সহ ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রোগীদের জন্য বিনা মূল্যে এন্টিভেনম ইনজেকশন সরবরাহ রয়েছে। তবে, নেই কোন রোগী।
খুলনার সিভিল সার্জন অফিস ও খুলনা মেডিকলে কলেজ হাসপাতালের সূত্রে জানা গেছে, গেল এক বছরেও সরকারী হাসপাতালগুলোতে কোন বিষধর সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিতে আসেনি। তবে সাপে কাটা রোগীদের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন এন্টিভেনম পর্যাপ্ত মজুদ আছে। এছাড়া সরকারীভাবে বর্তমান উপজেলা পর্যায়েও সরবরাহ আছে সাপে কাটা রোগীর ভ্যাক্সিন।
সচেতন নাগরিক মোঃ খালিদ হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের আনাগোনা। ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে একটি আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে বাড়ীর আঙ্গিনায় ঝোপঝাড় পরিস্কার করছেন। সবার মনে কেন যেন অজানা এক আতংক বিরাজ করছে এই রাসেল ভাইপার নিয়ে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মোঃ মেহেদি হাসান বলেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ১শ’ ভায়াল এন্টিভেনম ভ্যাক্সিন আছে। যা দিয়ে প্রাথমিকভাবে দশ জন সাপে কাটা রোগীকে চিকিৎসা দেয়া যাবে। মূলত: একজন সাপে কাটা রোগীকে দশ ভায়াল এন্টিভেনম দিতে হয়। তবে গেল এক বছরেও কোন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিতে আসেনি।
খুলনার কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য এন্টিভেনম ভাক্সিন আছে। প্রাথমিক ভাবে দু’জন সাপে কাটা রোগীকে এই চিকিৎসা দেয়া যাবে। তবে, গেল দেড় বছরেও কোন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিতে আসেনি।
খুলনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ মোহাম্মাদ কামাল হোসেন বলেন, খুলনা জেনারেল হাসপাতালসহ ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের জন্য এন্টিভেনম ভ্যাক্সিন আছে। তবে কোন রোগী চিকিৎসা নিতে আসেনি। তবে, এটি রাসেল ভাইপারের জন্য কতটুকু কার্যকর পরীক্ষা না করে বলা যাবেনা।
তিনি বলেন, এখনও অনেকে সাপে কাটার পর আগে ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়। যখন রোগীর অবস্থা খারাপ হয় তখন হাসপাতালে নিয়ে আসেন, ফলে সেই সময়ে ডাক্তারদের আর কিছু করার থাকে না। এ কারণে আমাদের দেশে সাপের কামড়ে মানুষ মারা যায়। এ জন্য কাউকে সাপে কাটলে তাকে ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে না গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে বিনামূল্যে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন দিতে হবে। সঠিক সময়ে এই ভ্যাক্সিন নিলে রোগী আল্লাহ পাক সুস্থ্য করবেন।