পুত্রবধূর বিরুদ্ধে স্বামী ও শাশুড়িকে নির্যাতন করার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা নগরীতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জোহরা খাতুন (৭৫), ও তার প্রবাসী পুত্রের অর্থ আত্মসাৎ করে তাদের নির্যাতন করে আসছে পুত্রবধূ। মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির একমাত্র পুত্র মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৪৭) তার স্ত্রী মোসাম্মাৎ রাবেয়া বেগম (৩৬) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ শশুরের বাড়ি হতে শাশুড়িকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করার। শাশুড়ি জোহরা খাতুন পুত্রবধূ মোসাম্মৎ রাবেয়া বেগমের নামে এ অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, জোহরা খাতুন (৭৫), পিতা- জহর আলী ফকির, মাতা- সবুরন্নেছা অভিযোগ করে বলেন,আমার স্বামী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার স্বামী দীর্ঘকাল বিদেশ করেছে এবং সারা জীবনের সঞ্চিত টাকা দিয়ে আমার ও আমার স্বামীর নামে একটি জমি কিনে ২০০৪ সালে ৫৬, জাহিদুর রহমান সড়কে একটি দ্বিতলা বাড়ী করে। তখন আমার একমাত্র ছেলে মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৪৭) বিদেশে ছিল। ২০০৫ সালে বিদেশে থাকাবস্থায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিবাদী মোসাম্মাৎ রাবেয়া বেগম (৩৬), পিতা- মৃত আফজাল খান, সাং- কাজদিয়া তারপরে, আলাইপুর, রূপসা,জেলা- খুলনার সাথে মোবাইল ফোনে আমার ছেলে মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৪৭)-এর বিয়ে হয়। তাদের একটি পুত্র সন্তান মেহেরাজ ইসলাম রাতুল (১৩) আছে। আমার পুত্র সুদীর্ঘ ১১ (এগার) বৎসর যাবং প্রবাসে থাকাকালীন স্ত্রী মোসাম্মাৎ রাবেয়া বেগম নামে মোটা অংকের “জবসরঃঃধহপব” পাঠায় এবং সে আমাদের নিজস্ব দ্বিতল বাড়ীর ভাড়া বাবর ৩৫-৪০ হাজার টাকা নিজে তোলে । এ সকল টাকা সে নিজের ইচ্ছা মত খরচ করে। আমার ঔষধ কেনার টাকাও সে দেয় না। আমার ছেলে দেশে ফেরার পর উক্ত “জবসরঃঃধহপব” ও বাড়ীভাড়ার টাকা কোথায় কিভাবে খরচ করেছে এবং সঞ্চয় করেছে জানতে চাইলে তার কোন সদুত্তর দেয় না। এছাড়াও আমাকে নিয়ে আমার স্বামীর নামের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা তুলে আমাকে না দিয়ে সে টাকাও টাকা আত্মসাৎ করে। আমার পুত্র সুদীর্ঘ ১১ বৎস প্রবাসে থাকাকালীন। মোসাম্মাৎ রাবেয়া বেগম আমার বাড়ী হতে অনেক মালামাল, জিনিসপত্র ও স্বর্ণালংকারসহ যাবতীয় কাগজপত্র অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। যেমন- প্রবাস থেকে পাঠানো অর্থ, মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বই,আমার ব্যবহারের প্রায় ৪০ ভরি স্বর্নালংকার ও আমার স্বামীর বিদেশ হতে পাওয়া ১০ভরি ওজনের বিভিন্ন সোনার মেডেল এ সকল জিনিস ফেরত আনতে বললে সে আমাকে ও আমার পুত্রকে মারতে আসে। সে তার ভাই ১। বিল্লাল হোসেন খাঁন (৪৭), ২। শমসের খাঁন (৪৯) উভয় পিতা- মৃত আফজাল যান, সাং- বসুপাড়া ব্যসতলার মোড়, স্বর্ণকার গলি, তার বোন ৩। লায়লা বেগম (৩৫), স্বামী জিয়াউর রহমান পাইক, সাং- কাশেম সাহেবের বাড়ীর পিছনে, সর্ব থানা- সোনাডাঙ্গা, জেলা- খুলনাসহ আরও কিছু ভাটাটিয়া গুন্ডা নিয়ে আমার বাড়ীতে এসে আমাকে এবং আমার পুত্রকে মারধর করে এবং জীবননাশের হুমকি দেয়। এ কারণে আমরা খুব সংখ্যার ভেতর দিন পার করছি। ভয়ে কিছু বলতে পারছি না। পুত্রবধূ
মোসাম্মাৎ রাবেয়া বেগমের অত্যাচারে আমি গত ০৪ বৎসর যাবত আমার স্বামীর বাড়ি হতে বিতাড়িত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমার পুত্রের সাথেও বিগত চার বছর স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নায়। আমার পুত্র আলাদা থাকে। আলাদা রান্নাব্ড়াা করে খায়। তাকে সব সময় ভয় দেখায়। যেকোনো সময় হত্যা করবে এমন হুমিকে দিয়ে থাকে। এছাড়া বলে তোকে আমি তালাক দিয়েছি। আমার পুত্র ও নাতীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি। পারিবারিক মুরব্বী ও উভয় পক্ষের স্থানীয় গন্যমান্য বাক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় একাধিক বার আপোষ মীমাংসা করার আপ্রান চেষ্টা করেছি কিন্তু কোন পরিবর্তন হয়নি। গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সকাল সাড়ে ১১টার সময় আমিও আমার দুর সম্পর্কের বোনের ছেলে মাহমুদ হাসান (৫৫)কে সঙ্গে নিয়ে পুত্রকে দেখার জন্য বাড়ীতে গেলে বিবাদী ১। মোসাম্মাৎ রাবেয়া বেগম(৩৬), ২। বিল্লাল হোসেন খান (৪৭), ৩। শমসের খাঁন (৪৯), ৪। লায়লা বেগম(৩৫) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আমার বাড়ীর গেট হতে বের হতে দেখে আমরা সরে তাদের বের হওয়ার রাস্তা করে দেই । কিন্তু ১নং বিবাদী ইচ্ছা করে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং গলা চেপে ধরে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে। বিবাদী ২ নং বিল্লাল হোসেন খান পরপর দুটি বিবাহ করে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। বিবাদী ৩ নং শমসের খানও দুটি স্ত্রী তাড়িয়ে দিয়েছে। এরকম নির্যাতনের ইতিহাস মধ্যযুগের বর্বরতাকে হার মানায়। এ ঘটনায় খুলনা সদর থানায় জোহরা খাতুন একটি জিডি করা করেছেন। জিডি নং ৯০৮, তারিখ-১৩/০২/২০২৩ । পুত্রবধূর এ ধরনের আচরণে দিশেহারা মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও পুত্র। তারা এর প্রতিকার দাবি করেছেন। এবং সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে জীবন যাপনের নিশ্চয়তা দাবী করেছেন সকলের কাছে।
ভুক্তভোগী সূত্রে আরো জানা যায়, নানাবিধ সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন এ দম্পতির সম্পর্কের অবনতি ঘটে। জাহিদের পরিবার বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের শিকার, সারা জীবনের সঞ্চিত অর্থে দিয়ে কেনা বাড়িতে গেলে মৃত্যুর ঝুঁকি। জাহিদ জানান, গত তিন মাস আগে আমার অবাধ্য স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছি। সিটি কর্পোরেশন ডিভোর্সটি গ্রহণ করলেও এখনও পর্যন্ত তার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীর কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। প্রতিমাসে বাড়ি থেকে ভ্ড়াা তোলা হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। ভয় ভীতি দিয়ে সবকিছু গ্রাস করে রেখেছে। এই মুক্তিযোদ্ধা সন্তান তাদের বাড়ি দখল মুক্ত করে মা- সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতে চান।