স্থানীয় সংবাদ

পাখি পালনে সাবলম্বি তাইজুল !

# শখ হতে পাখি পালন করে আজ আত্মনির্ভরশীল পরিশ্রমি তাইজুল #
# পাখি দেখতে দোকানটিতে ভীড় জমাচ্ছে উৎসুক ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা #

মো. আশিকুর রহমান ঃ নানা রঙের, নানা জাতের পাখি দেখতে নগরীর দৌলতপুরস্থ ঋষিপাড়া মোড়ের ‘শখের পাখি ঘর’ নামক প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিদিনই ভীড় জমাচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উৎসুক ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। শখ হতে পাখি পালন করে আজ আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে পরিশ্রমি মো. তাইজুল ইসলাম, গড়ে তুলেছেন ‘শখের পাখি ঘর’ নামের প্রতিষ্ঠান। তার বর্তমান বসবাস দৌলতপুর দেয়ানা উত্তরপাড়া এলাকায়। তার পিতা এক সময়ের রিক্সা চালক। রিক্সা চালিয়েই তিনি পরিবারের রুটি-রুজির ব্যবসা করতেন। বাবাকে সংসারের বোঝা টানার হাত হতে স্বতি দিতে পরিশ্রমী যুবক তাইজুল একটি সিকিউরিটি গার্ডের কোম্পানীতে গার্ডের চাকুরী নেয়। দিন যতই যেতে থাকে পরিশ্রমী তাইজুল তার এবং তার পরিবারের জীবনমান উন্নতকরণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা অব্যহত রাখে। রাতে সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরীর পাশাপাশি তার শখ ছিল পাখি পালন। পাখি কেনার সাধ্য নেয়, কিন্তু শখ থেমে থাকেনি। গত, ২০০৫ সালে তার এলাকায় এক চাচার কাছ থেকে এক জোড়া বাজুরিকা পাখি নিয়ে আসে পোষার জন্য। সেই এক জোড়া পাখি হতে পরবর্তীতে ৬/৮টি বাজুরিকা জন্ম নেয়। এভাবে তার নিবিড় পরিচর্চায় বাড়তে থাকে পাখির সংখ্যা। সময়ের পরিবর্তনে এক সময়ের শখের পাখি পালন ব্যবসায় পরিনত হয় তাইজুলের। গত, ২০১২ সালে হতে ঋষিপাড়া মোড়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে পাখির ব্যবসা শুরু করে। বর্তমানে তার নিকট রয়েছে রেইনবো বাজুরিকা, জাপানিজ বাজুরিকা, লুটিনো ইয়োলো ফিশার, রেড আই লুটিনো ফিশার, ব্লু মাক্স, কোকাটেল, টিয়া পাখি, পিসপেস লুটিনো, রোজি ফিশার, অফ লাইন লুটিনো ফিশার, কবুতরসহ হরেক রকমের পাখি। পাখি বিক্রয়ের পাশাপাশি তিনি এ্যাকুরিয়ামের মাধ্যমে মাছের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। মাছের মধ্যে রয়েছে, গোল্ড ফিস, এনজেল, কাপ্পি, মলি, ফাইটার, প্লাটি, জেব্রাসহ প্রভৃতি জাতের মাছ। এই ব্যবসার পাশাপাশি পাখি ও মাছের খাবার বিক্রি করছেন তিনি। তিনি তার এই অদম্য সাহসীকতা, সততা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে আগামী দিনে বৃহৎ পরিসরে পাখির খামার করে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনসহ এলাকার বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চান।
এলাকার বাসিন্দা আলামিন জানান, তাজুল ভাই খুব পরিশ্রমি ও ভালো মনের মানুষ। তিনি রাতে নাইট গার্ডের কাজ করেন এবং দিনে পাখি ব্যবসা পরিচালনা করেন। পরিশ্রম করে তিনি অল্প দিনে সাবলম্বি হয়ে উঠছেন। তার স্বপ বড় পরিসরে একটি পাখির খামার করবেন। ব্যবসায়ী লুৎফর জানান, তাজুল খুব ভালো ছেলে। ছোট বেলা হতে প্রচুর পরিশ্রম করে। একদিকে নাইট গার্ডের কাজ করে, অন্যদিনে পাখির দোকান সামলাই। তার পরিশ্রমের কারণে সে দিনে দিনে সাবলম্বি হয়ে উঠে। সৎ ইচ্ছা ও পরিশ্রমী হলে যে কোনে মানুষ সফলতার মুখ দেখতে পারে।
সোমবার (১৯ আগষ্ট) বিকালে একান্ত সাক্ষাতকারে শখের পাখির ঘরের সত্ত্বাধীকারী মো. তাইজুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান , আমি একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। আমার বাবা একজন রিক্সা চালক ছিলেন। তিনি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের ৩ ভাই-বোনকে মানুষ করেছেন। পরিবারের অভাব অনাটন দেখে সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরী নিয়ে ছিলাম, ব্যবসার পাশাপাশি সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরীটাও করছি। আমার ছোট বেলার শখ পাখি পোষা। মানুষের বাড়িতে নানার রকম পাখি দেখতাম, কিন্তু কেনার সামর্থ ছিল না। অবশেষে ২০০৫ সালের আমার গ্রামের এক চাচার কাছ থেকে এক জোড়া বাজুরিকা পাখি আনি। সেই থেকে পথ চলা, ২০১২ সাথে আমি বানিজ্যিক ভাবে পাখির ব্যবসা শুরু করি। পাখির পাশাপাশি এ্যাকুরিয়ামের মাছ ও খাবারের ব্যবসা করছি। আমার স্বপ্ন ভবিষ্যৎতে বৃহৎ পরিসরে পাখির খামার করে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনসহ এলাকার বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button