মহেশ্বরপাশায় জুয়েলার্সে ডাকাতিতে কোটি টাকার ক্ষতি
# আসামি প্রাইভেটকার চালকের স্বীকারোক্তিতে ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি চাপাতি, ১২ গ্রাম স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ ও ১৬টি স্বর্ণ রাখার ট্রে উদ্ধার # ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীর দৌলতপুরস্থ মহেশ্বরপাশা কালিবাড়ি বাজার সংলগ্ন দত্ত জুয়েলার্সে সোমবার (২৮ অক্টোবর) দিবালোকে প্রকাশ্যে ডাকাতির ঘটনায় ওই দোকানের মালিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী উত্তম দত্ত বাদী হয়ে সোমবার রাতেই প্রাইভেটকার চালক নাজিম উদ্দিন ওরফে খোকনসহ ৪/৫জনকে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা কালীবাড়ী বাজার ‘‘দত্ত জুয়েলার্সে” (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সংঘটিত দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় দৌলতপুর থানা পুলিশ ফুলতলা থানাধীন পুথিয়াবান্দা এলাকা থেকে কুখ্যাত ডাকাত নাজিম উদ্দিন খোকন (৪৫), পিতা-আঃ মালেক, সাং-ভবানীপুর, থানা-ভোলা সদর, জেলা- ভোলা কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সে বর্তমানে ঢাকা মীরপুর-নবাবের বাগ, শাহআলী থানা এলাকায় ভাড়া বাড়ীতে থাকেন। ডাকাত সদস্যের নিকট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১ টি প্রাইভেট কার, গহনা রাখা ট্রে-১৬ টি, স্বর্ণের কানের দুল-২ টি, আংটি-৫ টি, নাকফুল-১ টি, চাপাতি-১ টি এবং নগদ ৪,২৪৫ টাকা । প্রায় ৮০ ভরি স্বর্ণ ডাকাতরালুট করে নেয়। তবে উদ্ধার হয়েছে মাত্র ১২ গ্রাম। মামলার বাদী ও দত্ত জুয়েলার্সের প্রোপাইটার উত্তম দত্ত বলেন, সোমবার (২৮ অক্টোবর) ডাকাতির সময় অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে প্রায় ৮০ভরি স্বর্ণ ও ২ লক্ষ টাকাসহ প্রায় এক কোটি টাকার সম্পদ লুট করেছে। আমি প্রশাসনের নিকট আমার লুন্ঠিত সম্পদ দ্রুত উদ্ধারের দাবী জানাই। পুলিশ বলছে, ঘটনার দিন ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকা প্রাইভেটকার চালক নাজিম উদ্দিন ওরফে খোকনকে প্রাইভেটকারসহ গ্রেফতার করা হয়। আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তার প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি চাপাতি, তার নিকট থাকা ১২ গ্রাম স্বর্ণালংকার ( এক ভরির বেশি), নগদ অর্থ (৪ হাজার ২’শ ৪৫ টাকা) এবং ১৬ টি স্বর্ণ রাখার ট্রে উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণসহ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এ ডাকাতির ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
মামলার বাদী ও দত্ত জুয়েলার্সের প্রোপাইটার উত্তম দত্ত আরও বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকাতির ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, ঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতারসহ লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ উদ্ধারে পুলিশি ভূমিকার জোর দাবি জানাচ্ছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম জানান, দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা কালীবাড়ি বাজার সংলগ্ন দত্ত জুয়েলার্সের ডাকাতি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ইতিমধ্য ঘটনায় সম্পৃক্ত প্রাইভেট কার চালককে আটক ও প্রাইভেটকার জব্দ করেছি। আসামের স্বীকারোক্তি অনুসারে ১টি চাপাতি, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও স্বর্ণ রাখার ১৬টি ট্রে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯অক্টোবর) দুপুরে আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণসহ ডাকাতির প্রকৃত রহস্য উদঘটনে ও তদন্তের স্বার্থে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এ আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী জানান, কালিবাড়ী বাজার সংলগ্ন দত্ত জুয়েলার্সের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় দোকান মালিক উত্তম দত্ত বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে ঘটনায় সম্পৃক্ত আটক গাড়ি চালককে র স্বীকারোক্তি অনুসারে ১টি চাপাতি, ১২ গ্রাম স্বর্ণ, নগদ অর্থ ও স্বর্ণ রাখার ১৬টি ট্রে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণসহ ডাকাতির প্রকৃত রহস্য উদঘটনে ও তদন্তের স্বাথে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এ আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১টার পর প্রাইভেটকার যোগে আসা মুখোশধারী ৪/৫ দুর্বৃত্তরা দৌলতপুরস্থ মহেশ্বরপাশা কালিবাড়ি বাজার সংলগ্ন দত্ত জুয়েলার্সের ভেতরে দেশীয় অস্ত্র পিস্তল, চাপাতি নিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় তারা জুয়েলার্সের ভেতর ভাংচুর করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাদেরকে গতিরোধ করার চেষ্টা করলে তারা ঘটনাস্থলে ৭/৮টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনার খবর শুনে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা, সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ও পিবিআই’র কর্মকর্তাগন উপস্থিত হয়ে তদন্ত শুরু করেন। ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের আটকের জন্য প্রশাসন খুলনার গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে চেকপোস্ট বসায় । ওই ধারাবাহিকতায় পুলিশ খান জাহান আলী থানা এলাকার পথের বাজার চেকপোস্ট হতে ডাকাতির কাজে সম্পৃক্ত প্রাইভেটকারটি ও চালককে আটক করে।