বেদখলে পাউবো’র জমি গুলোর হাজারও দখলদার

# নোটিসে আর চিঠিতে সিমাবদ্ধ কর্তৃপক্ষ #
শেখ ফেরদৌস রহমান ঃ খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিগুলোর হাজারও দখলদার থাকলেও নেয়া হয়না কোন ব্যবস্থা। এমনকি নাম মাত্র চিঠি আর নোটিসে সিমাবদ্ধ থাকছে কর্তৃপক্ষ। অধিকাংশ এসব জমিগুলো দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে মার্কেট, দোকানঘর, বাড়ী ঘর, মৎস খামারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। খুলনা পাউবো’র তালিকা অনুযায়ী প্রায় দুই হাজারে বেশি দখলদার রয়েছে। তালিকা করে বেশ কয়েকবার স্থাপনা গুলো উচ্ছেদে নামলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক আর আমলাদের প্রভাবে বেশি দুর যেতে পারেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এদিকে খুলনা পানি উন্নয়নে বোর্ডের শত শত কোটি টাকার সম্পদ বেদখলে থাকলেও কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেনা বিভিন্ন জটিলতায়। অনেক দখলদারেরা মামলা দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে রেখেছেন । আবার অনেক সময়ে জনবল সংকট সহ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ কালক্ষেপন করা হয় বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এর আগে ডুমুরিয়া কিছু অবৈধ স্থপনা দখলমুক্ত করা হয়। তবে গাজীর হাট, কালিয়া, নড়াইল এলাকায় প্রায় জমি বেদখলে। এ বিষয়ে কথা হয় সচেতন নাগরীক এ্যাঃ পাউবো’র এসব জমিগুলো প্রভাবশালি মহলদের একটি অংশ এতদিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দখল করে রাখলেও এখন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। এবিষয়ে আরও বেশি কঠোর হওয়ার প্রয়োজন পাউবো কর্তৃপক্ষের এমনটি মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে কথা হয় আইনজীবী মোঃ ওলিয়ুর রহমানের সাথে তিনি বলেন, পাউবো কোটি কোটি টাকার সম্পদ এভাবে দখল করে রেখেছে একটি চক্র। এমনকি কাগজ করে নিয়েছে নিজেদের নামে। এসব জমি অন্য জায়গায় বিক্রি করে দিচ্ছে। এখন নতুন স্বাধীন দেশে কোন ধরনের অনিয়ম আর হওয়া উচিত না। আইন যে অমান্য করবে তাকে শাস্তি পেতে হবে। সে যে হোকনা কেন। কাউকেই ছাড়া দেয়া যাবেনা। নদীর তীরসহ বিভিন্ন জায়গায় দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছে এসব মানুষেরা। আমি বলব এদেরকে চিহ্নিত করুন আইনগত ব্যবস্থা নিন। তবে খুলনা পানিউন্নয়ন বোর্ড পওর -১ ইতো মধ্যে স্বারক নং ৭৯৫ একটি চিঠি খুলনা জেলাপ্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য আবেদন করেছে। যার মধ্যে বেলেঘাট, গাজীরহাট, দিঘলিয়া, হাজিগ্রাম, চন্দ্রপুর, এলাকায় প্রায় কয়েকশ দখলদারকে নোটিস করেছে স্থাপনা ছেড়ে দিতে। তবে এখনও স্থাপনাগুলো ছাড়েনি দখলদারেরা। এ বিষয়ে কথা হয় গাজীরহাট দিঘলিয়া এলাকা দোকানদার শংকর শীল এর সাথে তিনি বলেন, আমি একা দখলদার না এরকম হাজারও দখলদার আছে। আমরা প্রয়োজনে ভাড়া দিব। তবে দোকান ঘর উচ্ছেদ করলে আমাদের উপার্জন বন্ধ হবে। এসব জায়গা ফাকা ছিল আমরা মাটি ফেলে উঁচু করেছি। এছাড়া অভিযোগ আছে ডুমুরিয়া শলুয়া এলাকায় সাবেক ইউপি সদস্য তরুণ কুমার মন্ডল তিনি টাকার বিনিময়ে পানি উন্নয়নের জমি দখল করে বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এনিয়ে বেশ কয়েকবার স্থানীয় প্রত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হলেও তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিবার পার হয়ে গেছে। খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাযকিয়া বলেন, আমরা পাউবো’র অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য একটি চুড়ান্ত তালিকা করেছি। যার প্রেক্ষিতে খুলনা জেলা প্রশাসন বরাবর ম্যাজিস্ট্রট নিয়োগের জন্য চিঠি দিয়েছি। তবে এখনও কোন ব্যবস্থা হয়নি। ম্যাজিস্ট্রট ক্ষমতা পেলে আমরা কঠোর হবো। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হলে মূলত জনবল আর প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োজন।