খুলনাঞ্চলে সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা

# খুলনাঞ্চলে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩৬৪১৯ হেক্টর #
# সর্বশেষ তথ্যনুসারে আবাদের অগ্রগতি ৩৪০৯৬ হেক্টর #
মোঃ আশিকুর রহমান ঃ রবি শস্য মৌসুমে খুলনাঞ্চলে বিস্তৃীর্ণ মাঠ এখন সবুজের মাঝে হলুদ ফুলের সমারোহ। হেমন্তে কালে আমন ধান ঘরে তোলার পরপরই খুলনাঞ্চলে কৃষকের ব্যস্ততা এখন রবি মৌসুমের সরিষা চাষবাদ নিয়ে। এঅঞ্চলের কৃষকেরা এবার সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চল সুত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের অধিভূক্ত ৪টি জেলায় রবি মৌসুমে সরিষার (উফশী ও স্থানীয় জাতের) আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৩৬৪১৯ হেক্টর জমি। যার মধ্যে খুলনার লক্ষ্যমাত্রা ২৩৩৯ হেক্টর, বাগেরহাট ১৬৮২ হেক্টর, সাতক্ষীরা ১৯০৫০ হেক্টর ও নড়াইল জেলায় ১৩৩৪৮ হেক্টর জমি। সর্বশেষ তথ্যনুসারে খুলনাঞ্চলে সরিষার আবাদের অগ্রগতি হয়েছে ৩৪০৯৬ হেক্টর জমিতে। আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়াসহ সার্বিক দিক অনুকূলে থাকলে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবে এই অঞ্চলের কৃষকেরা।
খুলনাঞ্চলের উপজেলা ডুমুরিয়া, দিঘলিয়াসহ ওই চার জেলার অধিভুক্ত বেশ কয়েকটি উপজেলার সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা গেছে, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকেরা এখন চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগসহ পরিচর্যা নিয়ে। ওই সকল এলাকার প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই তারা তাদের জমিতে সরিষা বপণ শেষে এখন সেচ ব্যবস্থা, কীটনাশাক প্রয়োগসহ পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বিল পাবলা ব্লকের কৃষক লালন জানান, আমরা তিনজন কৃষক মিলে ৬বিঘা জমিতে বাির সরিষা-১৪ আবাদ করেছি। বর্তমানে সরিষা ক্ষেতে ফুল ও ফল আসা শুরু করেছে। জাব পোকার আক্রমন হতে ফসলকে রক্ষা করতে কীটনাশক প্রয়োগ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে ৫ মণ করে সরিষা উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশা করি। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ডুমুরিয়া উপজেলার বিল পাবলা ব্লকে এবার ৪ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। সরিষা মাঠে এখন ফুল ও ফলের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। কৃষকেরা সরিষার ক্ষেতে সেচ প্রদান, সার প্রয়োগ, জাব পোকারোধে কীটনাশক প্রয়োগসহ পরিচচর্যার কাজে ব্যস্ত রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা তাদের কাংক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হবে। নড়াইল কালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আমিরুল ইসলাম জানান, আমার ধুসহাটি ব্লকে প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। বপণ শেষে এখন মাঠে সরিষার ফুল ও ফলের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। কৃষকেরা এখন সরিষা আবাদকে ঘিরে ক্ষেতে সেচ প্রদান, সার প্রয়োগ, জাব পোকা দমন রোধকল্পে কীটনাশক প্রয়োগসহ পরিচর্যা কাজে ব্যস্ত রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা তাদের কাংক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হবে। খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কিশোর আহম্মেদ জানান, দিঘলিয়া উপজেলাতে চলতি অর্থবছরে ১২০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলাতে ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টিপাত বেশি থাকা এবং জলাবদ্ধতাসহ আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকার দরুন সরিষা বপণে ব্যাঘাত ঘটেছে, তারপর আবাদ সন্তোষজনক। উপজেলার সরিষা আবাদ ঘিরে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চল খুলনার অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবদি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে খুলনাঞ্চলের ৪ জেলার সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৩৬৪১৯ হেক্টর জমি। ইতোমধ্যে আবাদের অগ্রগতি হয়েছে ৩৩৮১০ হেক্টর জমিতে। একই সাথে এই অঞ্চলে দূর্যোগ সহনশীল (জলাবদ্ধতা সহনশীল) বিনা সরিষা- ৯ জাতের সরিষা ২’শ হেক্টর জমিতে রিলে ফসল চাষ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়াসহ সার্বিক দিক অনুকূলে থাকলে এই অঞ্চলের কৃষকেরা তাদের কাংক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হবে।



