খুলনায় রাতে কিলিং মিশনে তৎপর সন্ত্রাসীরা

# দেড় মাসে গুলিতে হতাহতসহ নিহত ৩ #
কে এইচ মনি ঃ খুলনায় রাতে কিলিং মিশনে তৎপর হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসীরা। গত দেড় মাসে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছে তিন জন। এছাড়া প্রকাশ্যে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্রের দিয়ে কুপিয়ে আহতের ঘটনাও ঘটছে। এসব হত্যাকা-গুলো ঘটনা ঘটেছে রাতের বেলায়। একের পর এক হত্যা কা-ের ঘটনায় উদ্ধিগ্ন খুলনাবাসী। তবে এসব ঘটনাগুলো নিরিবিচ্ছিন্ন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাাড়ে ৮টায়ত ৪৩ হাজী মুহাসিন রোড মেসার্স এম হোসেন এন্টারপ্রাইজ ফ্লেক্সিলোডের দোকানে বসে ছিলেন সোহেল। এ সময়ে দুর্বৃত্তদের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সোহেল দোকান থেকে দৌড় দিলে দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। একটি গুলি তার পেটের বাম পাশে বিদ্ধ হয়। এ সময়ে সোহেল জমাদ্দার টাওয়ারের সামনে পড়ে গিয়ে পুনরায় উঠে দৌড় দিতে গিয়ে আরজান আলী সড়কের মধ্যে পড়ে যান। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত যুবক সাতক্ষীরা জেলার আমুলিয়া রাজাপুর এলাকার খালেক কারিগরের ছেলে। তিনি খুলনা নগরীর বাবুখান রোডের দ্বিতীয় গলিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। পেশায় একজন রং মিস্ত্রী।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের দাবি এসব নিরিবিচ্ছ্ন্নি ঘটনা। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এসব হত্যাকা- ঘটছে। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর রাতে নগরীর টুটপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আমিন মোল্লা বোয়িংকে গুরুতর আহত করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় কিশোর গ্যাং আশিক বাহিনীর প্রধান আশিক, তার ভাই সজীবসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে খুলনা সদর থানায় মামলা করেন আমিনের ছোট ভাই মো: আবদুল্লাহ। এছাড়া ২ নভেম্বর রাতে নগরীর আলকাতরা মিল এলাকায় সন্ত্রাসীরা গুলি করে ও কুপিয়ে পঙ্গু রাসেল নামে এক সন্ত্রাসীকে হত্যা করে। এ সময় সজীব ও ইয়াসিন নামে দুই যুবককে কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। একই রাতে ( ২ নভেম্বর) নগরীর বাবু খান রোডে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান বেলালকে আহত করে। এছাড়া খুলনায় সন্ত্রাসীর গুলিতে আকাশ নামের এক যুবক আহত হয়। এর আগে গত ৫ নভেম্বর রাতে অস্ত্রধারীরা রফিকুল ইসলাম মুক্তা নামে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে। নগরীর বসুপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গত ২৮ অক্টোবর দুপুরে সন্ত্রাসীরা গুলি করে ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নগরীর দৌলতপুর থানার কালীবাড়ি বাজারের দত্ত জুয়েলার্সে ডাকাতি করে। তারা জুয়েলার্স থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ ২ লাখ টাকা লুট করে পালিয়ে যায়। গত ২১ অক্টোবর রাতে কয়রা উপজেলার কাটাখালী গ্রামে পুলিশের ওপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা অপহরণ মামলার আসামি হারুন গাজীকে ছিনিয়ে নেয়। তাদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।