খুমেক হাসপাতালে এমসি শাখার রফিকের বিরুদ্ধে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসকদের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের এমসি শাখার অফিস সহকারি মো: রফিক এর বিরুদ্ধে খোদ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া জরুরি বিভাগের ইনচার্জসহ সিনিয়র স্টাফ নার্সরাও পৃথক অভিযোগও দিয়েছেন। এর আগে এমসি শাখার রফিকের বিরুদ্ধে জখমি সনদপত্র বাণিজ্য নিয়েও অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময় সে বিভিন্ন তদবিরের কারণে তার বিরুদ্ধে তখন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ কোন তদন্ত কমিটি গঠন করেনি বলে একাধিক সূত্র জানায়।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা: মহাসিন আলী ফরাজি রোববার রাতে এ প্রতিবেদককে বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা রফিকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শনিবার ওই লিখিত অভিযোগ তিনি হাতে পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, জরুরি বিভাগের ইনচার্জসহ সিনিয়র স্টাফ নার্সরা যে অভিযোগ দিয়েছে তা এখনো আমি হাতে পাইনি। হাসপাতালের পরিচালক বলেন, রফিকের বিরুদ্ধে হাসপাতালে জখমি সনদপত্র বাণিজ্য নিয়ে অভিযোগ আমি জানতে পেরেছি। এসব বিষয় নিয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে তিনি জানান।
খুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকরা জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের এমসি শাখার অফিস সহকারি মো: রফিক এর বিরুদ্ধে রোগীদের জখমি সনদ পত্র দেয়া নিয়ে বিভিন্ন সময় রোগীদের তালবাহানা করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের চিকিৎসকদের নাম ভাঙ্গিয়ে ভিকটিমের জখম সনদপত্র ব্যক্তিদের কাছ থেকেও টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিলে তাদের সাথে নানা অজুহাত দেখিয়ে তালবাহানা করে। এছাড়া জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের অনুমতি ছাড়া বিভিন্ন জিনিসপত্র ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ আতাউর রহমান বলেন, আমরা ২য় শ্রেনী সরকারি চাকুরিজীবি আর রফিক তৃতীয় শ্রেনীতে। সে জরুরি বিভাগে এসে জরুরি বিভাগে যত সিনিয়র স্টাফ নার্স আছে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। এছাড়া তার কার্যক্রম অশোভনীয়। নিজেকে রফিক একজন প্রথম শ্রেণীর পদমর্যাদায় কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে জাহির করেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শনিবার জরুরি বিভাগের সকল সিনিয়র স্টাফ নার্সরা হাসপাতালের পরিচালকের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এর আগে ২০২৪ সালে মার্চ মাসে জখমি সনদপত্র নিতে আসা জনৈক তৈয়ব নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৬০০ টাকা নিয়েছিলেন। ওই ভুক্তভোগী তৈয়ব জানিয়েছিল তার চাচীসহ তিন জনের জখমি সনদ নিতে হাসপাতালে এমসি শাখায় অফিস সহকারি মো: রফিকের কাছে আসেন। সাথে ছিলো ভিকটিমের চিকিৎসা সংক্রান্ত সনদপত্র সরবরাহের আবেদন কপি সংশ্লিষ্ট থানার। তারপরেও নানা তাল-বাহানা শুরু করেন ওই রফিক। এরপর রফিককে ৬০০ টাকা দেন তৈয়ব। তারপরেও বলেন, ১০-১২ দিন পর আসেন। ওই সময়ে এসেও তাকে নানা অজুহাতে দেখিয়ে রফিক বলেন, সময় লাগবে। এ নিয়ে দৈনিক প্রবাহ পত্রিকায় নিউজ হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
জানা গেছে, হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আতাউর রহমান গত ২ ডিসেম্বর মারা যাওয়ার দুই ঘন্টার মধ্যে তাকে অতিরিক্ত ওয়ার্ড মাস্টার হিসেবে দায়িত্ব পান। তাকে এই দায়িত্ব দেওয়ার হাসপাতালের স্টাফরা প্রতিবাদও জানিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে এমসি শাখার অফিস সহকারি মো: রফিক তার বিষয়ে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন চিকিৎসকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করিনি। আমার নামে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তাও আমি জানি না।