খুলনায় ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে ৯ ঘন্টা রেলপথ অবরোধ

সাড়ে ৫ ঘন্টা বিলম্বে ট্রেন চলাচল শুরু
স্টাফ রিপোর্টার : ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে খুলনায় রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করছেন প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ খুলনা বিএল কলেজ, কুয়েট, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ও খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) শিক্ষার্থীরা। এতে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। রোববার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে বিএল কলেজ সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তবে, সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৯ ঘন্টা পর শিক্ষার্থীরা রেলপথ থেকে উঠে যাওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের সাড়ে ৫ ঘন্টা বিলম্বে রাত ৮টা ৪৮ মিনিটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
আন্দোলনরত এক নারী শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবিতে এখানে আন্দোলন পালন করছি। এই আন্দোলনে আমাদের অন্য ভাইয়েরা অনশনে আছে, ৩ তিন ধরে তাদের কেউ কোনো খোঁজ খবর নেয়নি, সবাই আমাদের পক্ষে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো সু-খবর আসেনি। কোনো নোটিশ আসলে আমরা এখান থেকে সরে দাঁড়াবো। সরকারের কাছে আমাদের একটাই যৌক্তিক দাবি, সময় বৃদ্ধির করা হোক। আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের এই আন্দোলন মূলত সময় পিছিয়ে নেওয়ার জন্য। যদি ইতিহাস দেখি, প্রত্যেকটি বিসিএস ৪৪ তম, ৪৫তম ও ৪৬ তম যতগুলো বিসিএস আছে, লিখিত পরীক্ষার জন্য নূন্যতম ৬/৮ মাস সময় পেয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সর্ব্বোচ ১৫/১৬ মাস সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা এটাকে খারাপভাবে দেখছি না, আমাদের দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। দুই মাসে লিখিত পরীক্ষার এতো বড় সিলেবাস শেষ করা কি সম্ভব? সময় বাড়ানোর যৌক্তিক দাবিতে আমরা এ আন্দোলন করছি। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা মেডিকেল কলেজ, কুয়েট, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বিএল কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত পিএসসি যৌক্তিক সময় না বাড়াবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এর আগে গত ৯ নভেম্বর থেকে এ আন্দোলন শুরু হয় দেশব্যাপী।
খুবি’র শিক্ষার্থী মাহিন বলেন, আমাদের একটাই দাবি সেটা হলো লিখিত পরীক্ষার সময় পিছিয়ে একটা যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করা। আমরা দ্রুত পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে এলেও পিএসসি তাদের এক রুখা মনোভাব পোষণ করে রেখেছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু আজও আমরা পজেটিভ কোন উত্তর পাইনি।
অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, দ্রুত নতুন সময় নির্ধারণ করে পিএসসি থেকে নোটিশ দিতে হবে। আর তারা তা না করলে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এর আগে রোববার দুপুর থেকে রেললাইন অবরোধ করে আন্দোলন করে। যার প্রেক্ষিতে সারা দেশের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ব্লকেট চলাকালীন সময় শিক্ষার্থীদের রেলপথ থেকে সরে যাওয়ার জন্য রেলওয়ে পুলিশ, দৌলতপুর থানা পুলিশসহ কেএমপি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুরোধ জানান। কিন্তু আন্দোলনকারীরা রেললাইনের উপর বসে থেকে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
রাতে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সুন্দরবন এক্সপ্রেস বিকেল সাড়ে ৩টায় খুলনা স্টেশনে প্রবেশের কথা থাকলেও দৌলতপুর স্টেশনে আটকে যায়। অবরোধ তুলে নেওয়ায় ৫ ঘন্টা ১৮ মিনিট পর রাত ৮টা ৪৮ মিনিটে ট্রেনটি খুলনা স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। এছাড়া সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস বিকেল ৪টায় রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও অবরোধ তুলে নেওয়ার পর রাত ৯টায় ছেড়ে যায়।



