জাতীয় সংবাদ

ইভ্যালির দেড়শ গ্রাহককে ১৫ লাখ টাকা ফেরত

প্রবাহ রিপোর্ট : নতুন করে কার্যক্রম শুরুর পর গ্রাহকদের আটকে থাকা অর্থও ফেরত দিতে শুরু করেছে আলোচিত ই কমার্স সাইট ই ভ্যালি। গতকাল রোববার সকালে কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে দেড়শ গ্রাহককে ১৫ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকাও ফেরত দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানের উপস্থিতিতে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল গ্রাহকদের হাতে পাওনা টাকা তুলে দেন। তিনি বলেন, “নতুন করে ইভ্যালি শুরু করার পর আমাদের যে টাকা লাভ হয়েছে সে টাকা থেকেই পাওনাদারদের অর্থ পরিশোধ শুরু করেছি।” নতুন করে কার্যক্রম শুরুর পর ৬৫ হাজারেরও বেশি পণ্য গ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে রাসেল বলেন, “আমরা এখন যে পদ্ধতিতে পণ্য বিক্রি করছি, এতে করে খুব দ্রুতই সবার টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হবে। “যারা অভিযোগ করেছে শুধু তাদের নয়, সবার টাকাই পর্যায়ক্রমে আমরা পরিশোধ করব।” অনুষ্ঠানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যবসায় নেমে বিশাল ছাড় দেওয়ার চমক দেখাতে গিয়ে আড়াই বছরেই ক্রেতা ও পণ্য সরবরাহকারীদের কাছে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ে পড়ে ইভ্যালি। তবে সেই হিসাবে আস্থা না পাওয়ার কথা জানিয়ে বিভিন্ন সংস্থার তথ্যের বরাত দিয়ে কোম্পানিটি এক হাজার কোটি টাকারও বেশি দায়দেনায় পড়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তখন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। তবে নানা জটিলতার কারণে এসব বিষয়ে কোনো পক্ষই চূড়ান্ত কোনো তথ্য হাজির করতে পারেনি। রাসেল গ্রেপ্তার হওয়ার এক মাসের মধ্যে ইভ্যালির প্রধান সার্ভারটিও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দায়দেনার হিসাব আর সামনে এগোনো যায়নি। এক গ্রাহকের করা মামলায় ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব। এরপর তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ইভ্যালির পুনর্গঠন হিসাব-নিকাশের সুবিধার্থে তার স্ত্রী শামীমাকে এক বছরের মাথায় শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল আদালত। আর রাসেল মুক্তি পান গত ১৯ ডিসেম্বর। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ও পরে এই দম্পতির বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি ও অন্যান্য প্রতারণার দায়ে দেশে সাড়ে ৩০০ এর অধিক মামলা হয়েছিল। এসব মামলার মধ্যে বেশ কয়েকটিতে রাসেলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। রাসেল মুক্তি পাওয়ার আগে থেকেই ইভ্যালি ব্যবসা শুরু করে। তবে এখন আর অগ্রিম টাকা নিয়ে নয়, ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পণ্য বিক্রি করছে তারা। রাসেলের ভাষ্য অনুযায়ী, বন্ধ হওয়ার আগে রমরমা পরিস্থিতিতে ইভ্যালির ইউনিক কাস্টমার ছিল ৪২ লাখ। নতুন পদ্ধতিতে ইউনিক গ্রাহকের সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজারে পৌঁছেছে। বর্তমানে ১২০ জন লোকবল নিয়ে চলছে ইভ্যালি। তাতে মাসে ৪০ লাখ টাকা খরচ গুনেও মাস ছয়েক ধরে আয়-ব্যয় সমান সমান (‘ব্রেক ইভেনে’) পর্যায়ে রয়েছে কোম্পানিটি। পরে মুনাফার মুখও দেখে। ইভ্যালির ওয়েবসাইট ও ফেইসবুক পেইজে গিয়ে দেখা যায়, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, ঘড়ি, ফ্যাশন পণ্য, হোম এপ্লায়েন্সসহ বিভিন্ন পণ্যের মজুদ রয়েছে সেখানে। রাসেলের মুক্তির পর ইভ্যালির ফেইসবুক পেইজে তার ভক্তদের অভিনন্দন বার্তাই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button