জাতীয় সংবাদ

মাহে রমজানের সওগাত-৬

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন
পবিত্র মাহে রমজানের আজ ষষ্ঠ দিবস। এই মাসে সিয়াম সাধনা বা রোজা পালনের একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। কারণ মানুষ যে কাজই করে তাতে দুটি বিষয় অবশ্যই থাকবে। প্রথমতঃ কাজের পেছনে থাকবে একটি উদ্দেশ্য। দ্বিতীয়তঃ সেই উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য থাকবে কর্মপন্থা। তেমনি সিয়াম সাধনার রয়েছে একটি মহৎ উদ্দেশ্য। এ সম্পর্কে সিয়াম পালনের হুকুম দেয়ার পাশাপাশি আল্লাহতায়ালা বলেছেন, লায়ল্লাকুম তাত্তাকুন অর্থাৎ তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে এই জন্য যে, সম্ভবতঃ তোমরা মুত্তাকী ও পরহেজগার হতে পারবে। আল্লাহপাক কিু বলেননি যে, রোজা রেখে তোমরা নিশ্চয়ই পরহেজগার ও মোত্তাকী হয়ে যাবে। কারণ রোজার মাধ্যমে যে সুফল লাভ করা যায় তা কেবল রোজাদারের নিয়ত, ইচ্ছা-আকাক্সক্ষা ও আগ্রহের উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে। যে ব্যক্তি রোজার উদ্দেশ্য জানতে ও ভাল করে বুঝতে পারবে এবং তা দ্বারা মূল উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করবে সে তো কমবেশী মুত্তাকী বা পরহেজগার নিশ্চয়ই হবে। কিন্তুু যে ব্যক্তি রোজার উদ্দেশ্যই জানবেনা এবং তা হাসিলের জন্য চেষ্টাও করবেনা, রোজা দ্বারা তার কোন উপকারই হবার আশা নেই। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) নানাভাবে রোজার আসল উদ্দেশ্যের দিকে ইংগিত করেছেন এবং বুঝিয়েছেন যে, উদ্দেশ্য না জেনে ক্ষুধার্ত ও পিপসার্ত থাকার কোন সার্থকতা নেই। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ পরিত্যাগ করবে না, তার শুধু খানাপিনা ত্যাগ করায় আল্লাহর কোনই প্রয়োজন নেই। অপর এক হাদীসে রাসুলে করীম (সাঃ) বলেছেন, অনেক রোজাদার এমন আছে কেবল ক্ষুধা আর পিপাসা ছাড়া তার ভাগ্যে অন্য কিছু জোটে না। তেমনি রাতে ইবাদতকারী অনেক মানুষও এমন আছে যারা রাত জাগার কষ্ট ছাড়া আর কিছুই লাভ করতে পারে না। এই দুটি হাদীস থেকে সুস্পষ্ট ভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, শুধু ক্ষুধার্ত ও পিপাসায় কাতর থাকাই ইবাদত নয়, আসল ইবাদতের উপায় অবলম্বন মাত্র। আসল ইবাদত হচ্ছে, আল্লাহর ভয়ে তার দেয়া বিধান ভঙ্গের অপরাধ না করা, আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের চেষ্টা করা এবং অহংকার বা নিজের আমিত্বকে বিসর্জন দেয়া। আল্লাহকে ভালোবেসে ঐকান্তিক ভাবে তার আদেশ নিষেধ মেনে চলাই আসল ইবাদত। রোজার উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহর রসুল আরো বলেছেন, ঈমান ও ইহতেসাবের সাথে যে ব্যক্তি রোজা রাখবে তার সকল অতীত গুনাহ-অপরাধ মাফ করে দেয়া হবে। মূল বিষয় হচ্ছে, একজন মুসলমান সব সময়ই আল্লাহর মর্জি-মাফিক চলবে এবং তার মর্জির খেলাফ কিছু করবে না। আল্লাহর রসুল (সা.) আরও বলেন, গুনাহ থেকে যে ব্যক্তি তওবা করে, সে একেবারে নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মাহে রমজানই হচ্ছে তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসার উৎকৃষ্ট ও উত্তম সময়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button