জাতীয় সংবাদ

মাহে রমজানের সওগাত-৭

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন
পবিত্র মাহে রমজানের আজ সপ্তম দিন। মহান আল্লাহর রহমত সিক্ত হওয়ার আর তিন দিন অবশিষ্ট আছে। কারণ রমজান মাসের প্রথম দশ দিন আল্লাহর রহমত সিক্ত হওয়ার জন্য নির্ধারিত। মূলতঃ মানুষের সমগ্র জীবনকে ইবাদতে অর্থাৎ আল্লাহর বন্দেগিতে পরিণত করাই হচ্ছে ইসলামী জীবন ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য, আসল উদ্দেশ্য। জন্মগত ভাবেই মানুষ আল্লাহর বান্দাহ, আল্লাহর বন্দেগি তার প্রকৃত স্বভাব। কাজেই চিন্তা ও কর্মের দিক দিয়ে এক মুহূর্তের জন্যও আল্লাহর বন্দেগি বা স্মরণ থেকে বিচ্যুত হওয়া মানুষের জন্য অনুচিত। আল্লাহর সন্তোষ ও অসন্তোষ বিবেচনায় রেখেই মানুষের জীবন যাপন করতে হবে। আর মানুষকে আসল ইবাদতের জন্য প্রস্তুত করাই হচ্ছে নামায, রোজা, হজ্জ, ও যাকাত নামের ইবাদত সমূহের প্রকৃত উদ্দেশ্য। কেবল গুণে গুণে দিনে রাতে পাঁচ বার নামাজ পড়লে, রমজান মাসে ত্রিশ দিন রোজা পালন করলে, ধনী হলে বছরে একবার যাকাত দিলে এবং জীবনে একবার হজ্জ আদায় করলেই আল্লাহর প্রতি মানুষের কর্তব্য পালন হয়ে যায় না। বরং এসব ইবাদতের মাধ্যমে মানুষকে সঠিকভাবে গড়ে তোলা, তার গোটা জীবনকে আল্লাহর বন্দেগির যোগ্য করে তোলাই হচ্ছে এসব ইবাদত ফরজ করার আসল উদ্দেশ্য। এক্ষেত্রে রোজার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কারণ রোজা ছাড়া অন্য সব ইবাদতের বাহ্যিক প্রকাশ আছে। নামাজ, যাকাত ও হজ্জ গোপনে করার উপায় নেই। কিন্তুু রোজার কথা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানতে পারেন না। সময় মত সেহেরী -ইফতার করেও দিনের বেলা গোপনে আহার করলে মানুষ তাকে রোজাদারই ভাববে। কিন্তুু আসলে সে মোটেই রোজাদার নয়। বিষয়টি আল্লাহ ছাড়া কেউ জানতে পারেন না। কাজেই প্রকৃত রোজাদার আল্লাহর ভয়েই ক্ষুৎ-পিপাসার কষ্ট সহ্য করে। ফলে তাঁর ঈমান মজবুত হয়, পরকালের বিচারের প্রতি তার আকিদা বিশ্বাস সুদৃঢ় হয়। এই ভাবে আল্লাহ তায়ালা প্রতি বছর এক এক মাস মানুষের ঈমানের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। এই পরীক্ষায় মানুষ যত বেশি সফল হবে, তার ঈমান আকীদা তত মজবুুত হবে। এই পরীক্ষায় মানুষ যখন পুরোপুরি ভাবে উত্তীর্ণ হয় তখন তাঁর মধ্যে আল্লাহকে ভয় করে অন্য সব গুনাহ থেকে বেচেঁ থাকার যোগ্যতা অধিক পরিমাণে জাগ্রত হয়। তখন সে আল্লাহকে আলেমূল গায়েব মনে করে গোপনেও আল্লাহর আইন ভঙ্গ করতে পারেনা। প্রতিটি কাজে সে কিয়ামতের দিনকে স্মরণ করবে, যেদিন সব কিছু উম্মুক্ত হয়ে যাবে। নিরপেক্ষভাবে সকল ভালো কাজের ভাল ফল ও মন্দ কাজের মন্দ ফল দেয়া হবে।
এই ভালোমন্দের প্রেক্ষিতেই জান্নাত-জাহান্নামে যাওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হবে। আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে রোজা পালনের তৌফিক দিন এবং অভীষ্ট ফল লাভে ধন্য করুন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button