জাতীয় সংবাদ

মাহে রমজানের সওগাত-২৩

মুহম্মদ আলাতাফ হোসেন
পবিত্র মাহে রমজানের আজ ২৩তম দিবস। চলছে সিয়াম সাধনার শেষ দশক জাহান্নাম থেকে মুক্তি বা নাজাত প্রদানের দশক। আর নাজাত লাভের পূর্বশর্ত হচ্ছে তাওবা ইস্তেগফার করা। মাহে রমজানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই তাওবা। ‘তওব’ শব্দের অর্থ হচ্ছে প্রত্যাবর্তন করা। গুনাহগার বান্দা তাওবার মাধ্যম আল্লাহর নাফরমানী থেকে আল্লাহর দিকে পুনরায় ফিরে আসে। বান্দা যত গুনাহই করুক না কেন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা ও মাফ করেন, কেবল মাত্র শিরক-এর গুনাহ ছাড়া। বান্দার গুনাহ যত বড় তাঁর রহমত তাঁর চাইতেও বড়। তাই নিরাশ হওয়ার কোন কারণ নেই। আল্লাহ পবিত্র কুরআন মজীদে,ঘোষণা করেছেন, ‘হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজের আÍার উপর জুলুম করেছ, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই, আল্লাহ সকল গুনাহ মাফ করেন। নি:সন্দেহে তিনি অধিক ক্ষমাশীল ও মেহেরবান। (সূরা যুমার-৫৩)
এ আয়াত অনুযায়ী আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া নিষিদ্ধ বা কুফরী। রমজান মাস হচ্ছে, তাওবা ও ক্ষমার মওসুম-রহমত, নাজাত ও মাগফেরাতের মাস। এই মাস তাওবার জন্য মহামূল্যবান। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ দিনে গুনাহকারীদের গুনাহ মাফ করার জন্য রাত্রে নিজ ক্ষমার হাত সম্প্রসারিত করেন এবং রাত্রে গুনাহকারীদের গুনাহ মাফ করার জন্য দিনে নিজ ক্ষমার হাত সম্প্রসারিত করেন।’ কেয়ামতের আগে পশ্চিমে সূর্যোদয় পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকবে।’ আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফের জন্য রীতিমত অপেক্ষা করেন। বান্দা মাফ চাইলেই মাফ পেতে পারে। রাসূলুল্লাহ (সা) আরো বলেছেন: ‘সেই ব্যক্তির নাক ধূলামলিন হোক, যে রমযান পেয়েছে কিন্তুু তার গুনাহ মাফ হয়নি।’ (তিরমিযী)
হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত আছে: ‘আল্লাহ বলেন, হে বনি আদম! তুমি আমার কাছে যা আশা করো এবং চাও, আমি তোমাকে মাফ করে দিলাম এবং এ জন্য আমি কোন পরোয়া করি না।, (তিরমিযী)
হাদীসে কুদসীতে আরো এসেছে, আল্লাহ বলেন, হে আমার বান্দা! তোমরা দিনে রাতে গুনাহ করে থাকো, আর আমি সকল গুনাহ মাফ করি। তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেব।’ (মুসলিম)
গুনাহ মাফের জন্য এর চাইতে বড় প্রতিশ্রুতি আর কি হতে পাওে ? আল্লাহ আরও বলেন: ‘তিনি সেই সত্তা যিনি বান্দার তাওবা কবুল করেন, তাদের গুনাহ মাফ করেন এবং তোমরা যা করো সবকিছু তিনি জানেন।’ (সূরা শুরা-২৫)
তিনি বান্দার তাওবা কবুল করেন। কিন্তুু শর্ত হলো এখলাসের সাথে তাওবা করতে হবে এবং এরপর ইচ্ছাকৃতভাবে আর সেই গুনাহর পুনরাবৃত্তি করা যাবে না। আল্লাহ বলেন, যারা অশ্লীল কাজ করে ফেললো কিংবা নিজেদের গুনাহর জন্য আল্লাহকে স্মবরণ করলো, আল্লাহ ছাড়া আর কে আছেন যিনি গুনাহ মাফ করেন এবং তারা জেনে-শুনে কৃত গুনাহর পুনরাবৃত্তি করে না। তাদের পুরস্কার হলো, আল্লাহর ক্ষমা এবং এমন জান্নাত যার তলদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত, তারা সেখানে চিরদিন থাকবে। আমলকারীদের পুরস্কার কতই না উত্তম! (সূরা আলে ইমরান-১৩৫-১৩৬)।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button