গাজার স্কুলে ইসরায়েলি হামলা: নিহত ৩০, আহত শতাধিক
প্রবাহ ডেস্ক : গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল বালাহ শহরে একটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার এই দাবি করেছেন ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা হামাসের একটি কমান্ড সেন্টারে হামলা চালিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং হামাসের পরিচালিত সরকারি মিডিয়া অফিস দেইর আল বালাহর স্কুলে হামলায় নিহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করেছে। এই এলাকাটি বাস্তুচ্যুত পরিবারের অন্যতম প্রধান আশ্রয়স্থল। আহতদের মধ্যে অনেকে গুরুতর অবস্থায় আছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা দেইর আল বালাহর কেন্দ্রস্থলে খাদিজা স্কুল কম্পাউন্ডের ভেতরে অবস্থিত একটি ‘হামাস কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টারে’ হামলা চালিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্কুলটি থেকে সেনাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ এবং অস্ত্রের মজুদাগার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। হামলার পূর্বে বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছিল। দেইর আল বালাহর আল-আকসা হাসপাতালে, অ্যাম্বুলেন্সগুলো আহত ফিলিস্তিনিদের দ্রুত নিয়ে আসছিল। কিছু আহত মানুষ পায়ে হেঁটে হাসপাতালে পৌঁছান, তাদের পোশাক রক্তে মাখানো ছিল। পূর্বের হামলায় এখানকার বেসামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামাসকে দোষারোপ করেছে বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকিতে ফেলার জন্য। তাদের দাবি, হামাস জনবহুল এলাকায়- স্কুল ও হাসপাতালগুলোতে-কাজ করে। হামাস এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। খান ইউনিসে ইসরায়েলি আক্রমণ গতকাল শনিবার সকালে, ফিলিস্তিনি সরকারি মিডিয়া জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় খান ইউনিস শহরে অন্তত ১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং তাদের মৃতদেহ নাসের মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ফিলিস্তিনিদের খান ইউনিসের দক্ষিণাংশের এলাকা সাময়িকভাবে খালি করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের আল-মাওয়াসির একটি মানবিক অঞ্চলে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল-বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি বাড়িতে পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং রাফাহ শহরে আরেকটি বাড়িতে চারজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
মানবিক সংকট
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার কর্মকর্তারা ইসরায়েলকে যুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ এবং বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার ব্যবস্থা না করার অভিযোগ করেছেন। ইসরায়েল এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। শুক্রবার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, খান ইউনিসে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। সুড়ঙ্গ ও অন্যান্য অবকাঠামো ধ্বংস করেছে তারা। হামাসের ছোট ইউনিটগুলোকে দমন করার চেষ্টা করছিল তারা। হামাস যোদ্ধারা মর্টার দিয়ে সেনাদের আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজার আক্রমণ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৩৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, হামাস ও ইসলামিক জিহাদের মতো গোষ্ঠীগুলোর প্রায় ১৪ হাজার যোদ্ধাকে তারা হত্যা বা বন্দি করেছে। যুদ্ধের শুরুতে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি ছিল বলে ধারণা করা হয়। গত ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বাধীন আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয় বলে দাবি ইসরায়েলের। এই হামলার জবাবে গাজায় আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।