জাতীয় সংবাদ

সব দেশে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থাকলেও নেই শান্তি মন্ত্রণালয়: প্রধান উপদেষ্টা

প্রবাহ রিপোর্ট : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্বের সব দেশে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থাকলেও কোথাও শান্তি মন্ত্রণালয় নেই। যদিও প্রতিটি যুদ্ধ হয় ঘুরে-ফিরে শান্তির নামে। আমাদের সমস্ত ঘোষণা এবং আমাদের সমস্ত দর্শন, আমরা শান্তি চাই- দেশের অভ্যন্তরে শান্তি, দেশের মধ্যে শান্তি এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি। গতকাল রোববার সকালে গতকাল রোববার তেজগাঁওয়ে এনডিসি ও এএফডব্লিউসি কোর্সের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। এনডিসি ও এএফডব্লিউসি কোর্সের সদস্যদের উদ্দেশ্যে করে দেয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সব দেশে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থাকলেও কোথাও শান্তি মন্ত্রণালয় নেই। যদিও প্রতিটি যুদ্ধ হয় ঘুরে-ফিরে শান্তির নামে। বিশ্বের প্রতিটি সরকারের একটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আছে, আক্ষরিক অর্থে এটি যুদ্ধ মন্ত্রণালয়, কিন্তু কোনো শান্তি মন্ত্রণালয় নেই -এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি আপনার লক্ষ্য শান্তি হয়, তাহলে আপনার কী শান্তি মন্ত্রণালয় থাকা উচিত নয়? এমন প্রশ্ন রাখেন। এসময় তিনি নতুন কৃতকার্য অফিসারদের তাদের সাফল্যের জন্যে অভিবাদন জানান। সঙ্গে সঙ্গে দেশ এবং দেশের বাইরে সবার সঙ্গে শান্তি রক্ষা এবং নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে দেশের জন্যে কাজ করার আহ্বান জানান। এছাড়াও সাম্প্রতিক বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নিজেদের জায়গা থেকে সেনা সদস্যদের দেশের হয়ে কাজ করার কথা জানান তিনি। দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে তরুণদের মন ও স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি বিশেষ করে তরুণদের তাদের মন তৈরি করতে, চিন্তা করতে এবং স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করি। স্বপ্ন হল পরিবর্তনের সূচনা। আপনি যদি স্বপ্ন দেখেন, তবে তা ঘটবে। আপনি যদি স্বপ্ন না দেখেন, তবে তা কখনই হবে না। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, ‘আমি বিশ্বের জন্য কী করতে পারি?’ আপনি কী করতে চান তা একবার বুঝে নিলে, আপনি তা করতে পারবেন। কারণ আপনার সেই ক্ষমতা আছে-তরুণদের উদ্দেশ্যে করে এ এসব কথা বলেন অধ্যাপক ইউনূস।’ তিনি বলেন, বর্তমান গ্রহের তরুণ প্রজন্ম সমগ্র মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম। তারা যথেষ্ট স্মার্ট হওয়ার কারণে নয়, কারণ তাদের হাতে প্রচুর প্রযুক্তি রয়েছে বলেও জানান তিনি। আপনি যদি ছাত্র বিপ্লবের দিকে তাকান, তবে এটি সবই প্রযুক্তি নিয়ে। তারা (শিক্ষার্থীরা) খুব দ্রুত একে-অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তাদের কোনো কমান্ড কাঠামো ছিল না যোগ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রযুক্তি হল আলাদিনের প্রদীপের মতো। ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লব সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, দেশের তরুণরা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়। তরুণরা রাজনীতিবিদ নয় এবং কিছু রাজনৈতিক লক্ষ্য অনুসরণ করছে না, তবে তারা নিজেদের জন্য একটি নতুন দেশ চায়-বলেন তিনি। বিশ্ব শান্তির কথা উল্লেখ করে-২০০৬ সালের নোবেল শান্তি বিজয়ী বলেন, বেশিরভাগ সময়, মানুষ শান্তির নামে একে অপরকে হত্যা করে। তবে আমরা প্রতিদিন নিজেদের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের সমস্ত ঘোষণা এবং আমাদের সমস্ত দর্শন, আমরা শান্তি চাই। দেশের অভ্যন্তরে শান্তি, দেশের মধ্যে শান্তি এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি। অত্যন্ত হাস্যকর মনে হয় যে, বিশ্বের প্রতিটি সরকারের একটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আছে, আক্ষরিক অর্থে এটি যুদ্ধ মন্ত্রণালয়। কিন্তু কোনো শান্তি মন্ত্রণালয় নেই-এ কথা উল্লেখ করে তিনি ফের বলেন, যদি আপনার লক্ষ্য শান্তি হয়, তাহলে কী শান্তি মন্ত্রণালয় থাকা উচিত নয়? আক্রমণের বিরুদ্ধে জনগণকে নিজেদের রক্ষা করতে হবে, তা পর্যবেক্ষণ করে অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বের সরকারগুলোতে শান্তি মন্ত্রণালয় এবং যুদ্ধ মন্ত্রণালয়-উভয় মন্ত্রণালয় থাকার ওপর জোর দেন। তিনি প্রতিরক্ষা সংযুক্তির সাথে বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শান্তি সংযুক্তি প্রবর্তনেরও পরামর্শ দেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button