নাৎসি বাহিনীর মতো কর্মকা- করেছে বিগত সরকার: চিফ প্রসিকিউটর

প্রবাহ রিপোর্ট : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, শুধু জুলাই-আগস্ট মাসেই নয়, বিগত সরকার ক্ষমতায় আসার পরই গুম-খুন ও হত্যার বীভৎসতা সৃষ্টি করে। হিটলারের সময়ের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মতো ক্যাম্প তৈরি করে তাতে নিষ্ঠুরভাবে বন্দিদের নির্যাতন করা হয়েছে। তারা শুধু গণহত্যাই করেনি, নির্যাতনের যত রকম পন্থা রয়েছে সবই বাস্তবায়ন করেছে, যা হিটলারের নাৎসি বাহিনীর কথা মনে করিয়ে দেয়। গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। তাজুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারে যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন, তাদের মধ্যকার ১৩ জনকে আজ অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। আগামী দিনে যারা ফ্যাসিস্ট হতে চান, তাদের জন্য আজকের দিনটি এক শিক্ষার দিন। মানবতাবিরোধী অপরাধ করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না, বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতিকরণ, দলীয়করণের মাধ্যমে একটি নিপীড়ক সংস্থায় পরিণত করা হয়েছিল, সে স্টোরি আমরা আদালতে তুলে ধরেছি। একটি পরিবারকে ক্ষমতায় রাখার উদ্দেশে পিলখানা হত্যাকা-, শাপলা চত্বরে হত্যাকা-, এছাড়া নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল। আজকের সব অপরাধের প্রধান দায় শেখ হাসিনার। জুলাই অভ্যুত্থানে ৫৬ হাজার বর্গ মাইলজুড়ে টার্গেট করে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। এর তদন্ত সমাপ্ত করে বিচারের উপযোগী একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে আমরা দুই মাস সময় চেয়েছিলাম, আদালত এক মাস সময় মঞ্জুর করেছেন। এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিলো- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, গোলাম দস্তগীর গাজী, কামাল আহমেদ মজুমদার, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম। এদিকে অসুস্থ থাকায় ড. আব্দুর রাজ্জাককে আনা হয়নি বলে জানা গেছে। এতদিন অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তারা সবাই কারাগারে ছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বেঞ্চ আসামিদের হাজির করার আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।