জাতীয় সংবাদ

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ৭ দিনের মধ্যে কমিটি

প্রবাহ রিপোর্ট : সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা সম্ভব কিনা, তা যাচাইয়ে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটির সদস্যরা ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) করবেন। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা) অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়া খুব কঠিন। তবে ঢাকা উত্তরে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এছাড়া তিতুমীর কলেজের ১০ একর জমি রয়েছে। কমিটি সব বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত জানাবে। এদিকে বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল জানায়, আলোচনায় কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। কমিটি গঠনের পর কমিটি সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দেবে। তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। তবে বিশ্ববিদ্যালয় করা অসম্ভব কিছু না। এদিকে, আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে সাত দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছেন ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তারা। বৈঠকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মতিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয় সরকারি তিতুমীর কলেজের ১৪ শিক্ষার্থীর একটি প্রতিনিধিদল। প্রায় সোয়া ২ ঘণ্টা ধরে চলে এ বৈঠক। শিক্ষার্থীদের দাবি, ঢাকা উত্তরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় এ এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সুনির্দিষ্ট সুযোগের অভাব রয়েছে। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করলে এই অভাব পূরণ হতে পারে। দুপুর আড়াইটায় শিক্ষার্থীদের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে যায়। প্রতিনিধিদলে ছিলেন—মাহমুদ হাসান মুক্তার, মোশাররফ রাব্বি, নেয়েক নূর মোহাম্মদ, আব্দুল হামিদ, নূরুদ্দিন জিসান, মতিউর রহমান জয়, জাহাঙ্গীর সানি, মেহেদী হাসান মাল, আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ বেল্লাল, আল নোমান নিরব, হাবিবুল্লাহ রনি, তোয়াহা এবং কাউসার। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীর মহাখালীতে সরকারি তিতুমীর কলেজের ক্যাম্পাসের ভেতরে ফটকের কাছে অবস্থান করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা ‘ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি পালন করছিলেন। এরমধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে লেজ ক্যাম্পাসের সামনে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন করা হয় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের আনুমানিক প্রায় ২ প্লাটুন সদস্যকে মোতায়েন করা হয় কলেজের প্রধান ফটকের সামনে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গতকাল (গত সোমবার) শিক্ষার্থীরা রাস্তা আটকিয়ে যে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছিল, আজ (গতকাল মঙ্গলবার) সেই দুর্ভোগ সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। তাই অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে গত সোমবার দুই দফায় সড়ক অবরোধ করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। সকালে প্রথম দফায় মহাখালী এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন তারা। এ সময় একটি ট্রেন অবরোধ উপেক্ষা করে চলে গেলে তারা সেটিতে পাথর নিক্ষেপ করেন। এতে শিশুসহ বেশ কয়েকজন আহত হন এবং ট্রেনের কয়েকটি জানালা ভেঙে যায়। এরপর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখেন। এ সময় সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা আলোচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে গেলে বিকেল ৪টার সময় তারা অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের আলোচনায় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত প্রকাশ না করায় ফের আড়াই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। তবে এবার কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ তুলে নেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button